তোলা না দেওয়ায় মার সরকারি কর্মীকে

প্রতিদিনের মতো মোটরবাইকে চেপে এ দিনও চেকপোস্টে ২০০ টাকা তোলা আদায় করতে আসে স্থানীয় তৃণমূল নেতা। কিন্তু তার নির্দেশ না মানতেই ঘটে বিপত্তি।অভিযোগ, দফতরে কর্মরত সরকারি দুই কর্মীকে বেধড়ক মারধর করে প্রাক্তন প্রধান তথা ওই তৃণমূল নেতা পাণ্ডব দাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৬ ০২:১৪
Share:

আক্রান্ত সুবলচন্দ্র। — নিজস্ব চিত্র

প্রতিদিনের মতো মোটরবাইকে চেপে এ দিনও চেকপোস্টে ২০০ টাকা তোলা আদায় করতে আসে স্থানীয় তৃণমূল নেতা। কিন্তু তার নির্দেশ না মানতেই ঘটে বিপত্তি।

Advertisement

অভিযোগ, দফতরে কর্মরত সরকারি দুই কর্মীকে বেধড়ক মারধর করে প্রাক্তন প্রধান তথা ওই তৃণমূল নেতা পাণ্ডব দাস। দফতরেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহের সাহাপুর নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির চেক পোস্টে। ঘটনায় আক্রান্ত দুই কর্মী সুবলচন্দ্র যাদব ও বাপি ঘোষকে রাতে উদ্ধার করে সহকর্মীরা ভর্তি করেন মালদহ মেডিক্যালে।

চেক পোস্টের অফিসে ঢুকে মারধরের ঘটনায় আতঙ্কিত অন্য কর্মীরাও। তাঁদের অভিযোগ, বাড়তি পণ্য নিয়ে যাওয়া গাড়ি চেকিং করার সময় প্রায় ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। অনেক সময় গাড়ি চালকেরা গালিগালাজও করে। এই চেক পোস্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন কর্মীরা।

Advertisement

ইংরেজবাজার নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব আবু সাত্তা বলেন, ‘‘টাকা চেয়ে না পাওয়ায় স্থানীয় এক ব্যক্তি আমাদের দুই কর্মীকে মারধর করেছে। আহত হয়েছেন তাঁরা। আমরা প্রশাসন ও পুলিশকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি। নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত পাণ্ডব সাহাপুর পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রাক্তন প্রধান ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সে এখন তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে পাণ্ডব। তার কথায়, ‘‘আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। নিজেদের মধ্যে গোলমাল হয়েছে। এখন আমার নামে দায় চাপানো হচ্ছে।’’ মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে।

অতিরিক্ত পণ্যবাহী গাড়ি চেকিং করার জন্য ইংরেজবাজার নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির চেক পোস্ট রয়েছে পুরাতন মালদহের সাহাপুরে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চেক পোস্টে ছ’জন কর্মী নিযুক্ত। তাঁদের মধ্যে দু’জন করে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বহাল থাকেন চেক পোস্টে। এ দিন রাত ৯টা নাগাদ অফিসে ছিলেন রতুয়ার সামসির বাসিন্দা সুবলবাবু ও ইংরেজবাজারের কৃষ্ণপল্লির বাপিবাবু। অভিযোগ, চেক পোস্টে মোটরবাইক নিয়ে হাজির হয় সাহাপুরেরই বাসিন্দা ওই অঞ্চলের সিপিএমের প্রাক্তন প্রধান পাণ্ডব সহ তিন জন। প্রতিদিনের মতো এ দিনও ২০০ টাকা তোলার দাবি করে পাণ্ডব। সুবল বাবু সেই টাকা দিতে অস্বীকার করলে হেলমেট দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে বাঁচাতে গেলে মারধর করা হয় আর এক কর্মী বাপি ঘোষকেও। তার পরে দু’জনকেই ঘরের মেঝেতে ফেলে মারধর করা হয়। অফিসের আসবাবও ভাঙচুর করা হয় বলে দাবি কর্মীদের।

স্থানীয় কর্মীদের দাবি, তাঁরা গেলে অভিযুক্ত পাণ্ডব পালায়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বাপিবাবুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। সুবলবাবু এখনও চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ পাণ্ডব দলের কর্মী নন বলে দাবি করেছেন তৃণমূল ব্লক সভাপতি জহর ঘোষ। যদিও পাণ্ডব নিজেকে তৃণমূলের কর্মী বলে দাবি করেছে। সে বলে, ‘‘২০১৩ সাল থেকেই আমি তৃণমূলের কর্মী। নেতারা কে কী বলল, তা আমার জানা নেই।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement