স্কুল বাসের বিরুদ্ধে কোর্টে যেতে চান অভিভাবকরা

স্কুল বাস মালিকদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলল দার্জিলিং ডিস্ট্রিক্ট লিগাল এইড ফোরাম। রবিবার ফোরামের তরফে রাজ্য আইনি পরিষেবা সমিতিকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে স্কুল বাস মালিকেরা গায়ের জোরে বাসগুলি চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২৮
Share:

অভিযোগ এরকম বাস নিয়েই— নিজস্ব চিত্র।

স্কুল বাস মালিকদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলল দার্জিলিং ডিস্ট্রিক্ট লিগাল এইড ফোরাম। রবিবার ফোরামের তরফে রাজ্য আইনি পরিষেবা সমিতিকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে স্কুল বাস মালিকেরা গায়ের জোরে বাসগুলি চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল বাস মালিকদের সঙ্গে প্রশাসনের একাংশের যোগসাজশ থাকায় মালিকেরা আদালতের নির্দেশকেও উপেক্ষা করছেন। এতো পুরোপুরি আদালত অবমাননা। পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে তাতে, জনস্বার্থে মামলা পথেই হাঁটতে হবে।

Advertisement

এদিন লিগাল এইডের সম্পাদক অমিত সরকার আইনি পরিষবো সমিতির সদস্য সচিব অভিজিৎ সোমে’র কাছে চিঠি দিয়ে অবমাননার কথা জানিয়েছেন। ফোরামের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য আইনি পরিষেবা সমিতির মুখ্য উপদেষ্টার পদে আছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। তাঁকেও বিষয়টি জানানো হবে। অমিতবাবু বলেন, ‘‘স্কুল বাস মালিকেরা সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ ভেঙে আদালত অবমাননা করছেন। সমিতি সর্বস্তরে রিপোর্ট তলব করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আমরাও রিপোর্ট দেখে মামলার পথে যাব।’’ তিনি জানান, বাসগুলি যেভাবে চলছে, তাতে ছোট ছোট শিশুদের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা চলছে। শিলিগুড়ি শহর ছাড়াও নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি, মাটিগাড়া এবং ফাঁসিদেওয়া-সবর্ত্র একইভাবে বাসগুলি চলছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ডুয়ার্সের একটি স্কুল বাসের মামলায় জলপাইগুড়ি আদালত স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পরিবহন দফতরে সতর্ক করেছিল। তার পরেও অবশ্য পরিস্থিতি বদলায়নি।

এই অবস্থায় দ্রুত জরুরি বৈঠক করে আদালত অবমাননা নিয়ে আইনি পথে হাঁটতে চলেছেন নর্থবেঙ্গল গার্ডিয়ান ফোরাম। ফোরামের সভাপতি সন্দীপন ভট্টচার্য় বলেন, ‘‘ভয়ঙ্কর বিষয়। আদালত নির্দেশ দিচ্ছেন, আর তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিনের পর দিন অবমাননা করা হচ্ছে। এটা চলতে পারে না। আমরা দ্রুত জরুরি বৈঠকে বসে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

Advertisement

অভিভাবকদের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে স্কুল বাসের জন্য গাউডলাইন তৈরি করে দিয়েছে। বাস, আসন, কর্মী, জিপিআরএস, সিসিটিভি, মেডিক্যাল কিট-সহ যাবতীয় কিছু তাতে বলা রয়েছে। তার পরেও পুরানো বা অযোগ্য বাস ব্যবহার করা হচ্ছে। আসন থেকে জানলা কোনও কিছুই ঠিক নেই। বহু ক্ষেত্রে ৬০-৬৫ বছরের অবসর নেওয়ার চালকদের দিয়ে বাসগুলি চালানো হচ্ছে। অথচ প্রতিমাসে মাসে অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায় করা হচ্ছে। শহরে ৩০০ উপরে স্কুল বাস চললেও সেগুলির বেশিরভাগেরই ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ থেকে পরিবহণ দফতরের অফিসারদের একাংশের সঙ্গে লেনদেন না থাকলে এটা সম্ভব নয়। যা পুরোপুরি আদালত অবমাননার সামিল।

শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবী অখিল বিশ্বাস বলেন, ‘‘সাধারণ মামলার ক্ষেত্রে যে কোনও আদালতের নির্দেশ অমান্য করে শাস্তির মুখে পড়তে হয়। এতো দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তার অবমানোনা হলে তো বাস মালিকেরা কেন, পুলিশ, প্রশাসন, পরিবহণ দফতরের অফিসারেরা বিপদে পডতে পারেন। আর পুরো বিষয়টিতে যখন জড়িয়ে রয়েছে পড়ুয়াদের অধিকার এবং সুরক্ষার প্রশ্ন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন