ইস্তফা গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ প্রবীণের

এ বার ভাঙন দেখা দিল গুরুঙ্গের খাসতালুক পাতলেবাস-টাকভরেও। রবিবার দুপুরে মোর্চার টাকভর সমষ্টির সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রবীণ সাংতাং।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২০
Share:

দীর্ঘ দিন ধরে লুকিয়ে রয়েছেন বিমল গুরুঙ্গ। সেই সুযোগে পাহাড়ে কিছুটা হলেও প্রভাব বিস্তার করেছেন বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপা। এ বার ভাঙন দেখা দিল গুরুঙ্গের খাসতালুক পাতলেবাস-টাকভরেও। রবিবার দুপুরে মোর্চার টাকভর সমষ্টির সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রবীণ সাংতাং। গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রবীণ জানিয়ে দিলেন, তিনি রাজ্য সরকারকে সব রকম সহযোগিতা করবেন।

Advertisement

ইস্তফা দেওয়ার পরে প্রবীণ বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথা বলেছে। সেখানে পৌঁছতে বিভিন্ন স্তরে আলোচনা, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথেই যেতে হবে। আমি তাই রাজ্য সরকারকে সব রকম সহযোগিতা করব।’’ গুরুঙ্গের অনুপস্থিতিতে বিনয়-অনীতরা পাহাড়ের মানুষ ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে টানতে তৎপর। এর মধ্যে কার্শিয়াং ও দার্জিলিং পুরসভা তাঁদের ‘দখলে’ এসেছে। পাহাড়ের তিন বিধায়ক বিনয়-অনীতদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রবীণও কি তাঁদের সঙ্গ নেবেন? এই প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দেননি তিনি। শুধু বলেন, ‘‘এত দিন দিশাহীন কাজকর্ম হয়েছে। আমাদের সঠিক পথে থাকতে হবে।’’

মোর্চার লোকজন বলেছেন, এক সময় গুরুঙ্গের হাত ধরেই প্রবীণের উত্থান। দক্ষ সংগঠক হওয়ায় নিজের বাড়ির এলাকার কমিটির মাথায় তাঁকে বসান গুরুঙ্গ। কিন্তু বন্‌ধ, আগুনে গাড়ি জ্বালানো, সম্পত্তি পোড়ানো নিয়ে গুরুঙ্গের সঙ্গে তাঁর মতভেদ এবং সেই সঙ্গে দূরত্বও বাড়ছিল। তেমনিই, এলাকায় দিনরাত পুলিশি অভিযান চলতে থাকায়, স্থানীয়েরাও বিভিন্ন অভিযুক্তদের থেকে দূরে সরে যাওয়া শুরু করেন। এই অবস্থায় বিনয়পন্থীদের পাশে সরাসরি না দাঁড়ালেও প্রবীণ সরে এলেন গুরুঙ্গপন্থীদের কাছ থেকে।

Advertisement

বিনয়পন্থীদের অবশ্য দাবি, প্রবীণের সঙ্গে বিভিন্ন লোকজনের যোগাযোগ রয়েছে, কথাবার্তা চলছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তিনি বিনয়কে সমর্থন করবেন। তবে আর একটি মত হল, সরাসরি রাজ্যের সঙ্গে থাকার কথা বলে প্রবীণ আসলে নিজের পৃথক অবস্থানই তৈরি করতে চাইছেন। পাতলেবাস-টাকভর এলাকার নেতা হওয়ায় তাঁর গুরুত্ব সব সময়েই অন্যের থেকে বেশি।

এ দিনই চান্দমারি এলাকায় কয়েক জন মোর্চা সমর্থক কার্শিয়াঙের অনীত থাপার একটি সভায় যান। চান্দমারিতেই মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির বাড়ি। এ দিনই অবসরপ্রাপ্ত সেনা জওয়ানদের সংগঠন, মোর্চা ঘনিষ্ঠ গোর্খা রাষ্ট্রীয় সৈনিক মোর্চা বৈঠকে বসে। সেখানে জিএনএলএফের পুরনো নেতানেত্রীরাও ছিলেন। সংগঠনের সভাপতি বিআর দেওয়ান জানান, ‘‘কেন্দ্র সঠিক পদক্ষেপ নিচ্ছে না। রাজ্যকে চিঠি দিচ্ছি। আলোচনা করেই সমস্যা মেটানো দরকার।’’ রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় যাওয়া নিয়ে গোর্খা লিগেও চূড়ান্ত বিবাদ। উত্তরকন্যার পরে নবান্নের বৈঠকেও যোগ দেওয়ায় মদন তামাঙ্গের স্ত্রী ভারতী তামাঙ্গ ও লক্ষ্মণ প্রধানকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে লিগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন