সদ্যোজাত কোলে পরীক্ষা

উচ্চ মাধ্যমিকের শেষ দিন সকালে প্রসব যন্ত্রনা উঠেছিল। সঙ্গে সঙ্গেই বাগানের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সকাল আটটাতে শিশুপুত্রের জন্ম দেন ওই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এরপর বেলা ১২ টা থেকে বাগানের হাসপাতালে বসেই দর্শনের পরীক্ষা দেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালবাজার শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৬ ০১:৫৩
Share:

উচ্চ মাধ্যমিকের শেষ দিন সকালে প্রসব যন্ত্রনা উঠেছিল। সঙ্গে সঙ্গেই বাগানের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সকাল আটটাতে শিশুপুত্রের জন্ম দেন ওই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এরপর বেলা ১২ টা থেকে বাগানের হাসপাতালে বসেই দর্শনের পরীক্ষা দেন তিনি।

Advertisement

মালবাজার ব্লকের লিস রিভার চা বাগানের পাতিবাড়ি ডিভিশনের কুঠি লাইনের বাসিন্দা বছর কুড়ির ছাত্রী মমতা ওঁরাও ওদলাবাড়ির আদর্শ হিন্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। প্রসবের সময় আসন্ন জেনেও পরীক্ষার থেকে পিছু হটেননি মমতা। তার পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল ওদলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে। সব ক’টি পরীক্ষাই কেন্দ্রে গিয়েই দিয়েছিল সে।

কিন্তু সোমবার ভোর থেকেই বাড়িতে প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় তার স্বামী অনুরঞ্জন ওঁরাও তাকে লিস রিভার চা বাগানের হাসপাতালে ভর্তি করান। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই শিশুপুত্রের জন্ম দেন তিনি। এরপরেই তিনি পরীক্ষা দিতে চাওয়ায় স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মমতার স্বামী। ওদলাবাড়ি আদর্শ হিন্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শশীধর সিংহ এরপর দ্রুতই বাগানের হাসপাতালেই যাতে মমতা পরীক্ষা দিতে পারে তার ব্যবস্থা করে দেন।

Advertisement

একজন পুলিশ কর্মী একজন শিক্ষক প্রশ্নপত্র নিয়ে বেলা সাড়ে এগারোটাতেই হাজির হয়ে যান পরীক্ষা কেন্দ্রে। বারোটা থেকে শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে পরীক্ষা দিতে শুরু করেন মমতা। মাত্র কয়েক ঘন্টা বয়সের পুত্র সন্তানকে কোলে নিয়েই গোটা পরীক্ষা দিয়ে ফেলেন মমতা। পরীক্ষাও ভালই হয়েছে বলে জানান তিনি। মমতার কথায়, ‘‘শেষ পরীক্ষাটি না দিতে পারলে মন খারাপই লাগতো। অবশেষে ছেলের জন্মের পরও যে পরীক্ষা দিতে পেরেছি সেটা ভেবেই ভাল লাগছে।’’

স্ত্রীর মনের জোর রয়েছে বলেই ও প্রসবের পরেও দুর্বল শরীর নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে , তাই নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে বলে জানালেন পেশায় শিলিগুড়ির এক দোকানের কর্মী মমতার স্বামী অনুরঞ্জন। মমতার নিজের স্কুলের প্রধান শিক্ষক শশীধর সিংহ বলেন, ‘‘মনের প্রবল জোর না থাকলে এই অবস্থায় পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। মমতাই সেটাই করে দেখিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন