কালিয়াচক

যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, খুনের আশঙ্কা

সোমবার ভোরে বাড়ি লাগোয়া এলাকায় এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় মালদহের কালিয়াচকের কাঁঠালবনা গ্রামে। পরিবারের অভিযোগ, ওই যুবককে শ্বাসরোধ করে খুনের পরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ০৭:৪৭
Share:

সোমবার ভোরে বাড়ি লাগোয়া এলাকায় এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় মালদহের কালিয়াচকের কাঁঠালবনা গ্রামে। পরিবারের অভিযোগ, ওই যুবককে শ্বাসরোধ করে খুনের পরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ দিনই দুপুরে কালিয়াচক থানায় তিন জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কালিয়াচকের চৌরঙ্গী মোড়ে মৃতদেহ ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখায় আত্মীয় স্বজনেরা। পরে পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তুলে দেয়।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সামুদ্দিন শেখ (২৫)। তিনি পেশায় নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন। কালিয়াচকের কাঁঠালবনা গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন তিনি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি আইপিএল-এ তিনি বেটিং-এ অনেক টাকা খুইয়েছেন। গ্রামেরই কয়েকজন যুবক তাঁর কাছ থেকে টাকা পেতেন। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা ঘটনার সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখছি।’’

কালিয়াচক থানার বালিয়াডাঙা গ্রামপঞ্চায়েতের কাঁঠালবনা গ্রামের বাসিন্দা সামুদ্দিন শেখ। তাঁর বাবা নিজামউদ্দিন শেখ বছর চারেক আগেই মারা যান। সামুদ্দিনেরা মোট ১১ জন ভাই। তাঁদের মধ্যে সামুদ্দিন দশম। তিনি নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। মাস তিনেক আগে কালিয়াচকের বাসিন্দা মুকলেমা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর।

Advertisement

রবিবার রাতে খাওয়া দাওয়া করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান সামুউদ্দিন। তারপর রাতে আর বাড়ি ফেরেনি বলে দাবি পরিবারের। খোঁজ করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ দিন ভোর চারটে নাগাদ গ্রামবাসীরা মসজিদে যাচ্ছিলেন। সেই সময় বাড়ির পাশে একটি ফাঁকা জায়গায় সামুদ্দিনের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তাঁরা। তারপরে তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় সিলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। তবে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। পরিবারের অভিযোগ, সামুদ্দিনকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। তারপরে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মৃতের দাদা মানু শেখ বলেন, ‘‘আমার ভাই আইপিএলে বেটিং খেলে প্রচুর টাকা হেরে গিয়েছে বলে জানতে পারি। টাকার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তাই তাঁকে খুনও করা হতে পারে। আমরা থানাতে অভিযোগ দায়ের করেছি।’’

এ দিন বিকেলে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ময়না তদন্তের পর বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পথে বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কালিয়াচকের চৌরঙ্গি মোড়ে প্রায় ৩০ মিনিটের জন্য ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। রাস্তার উপরে মৃতদেহ রেখেই চলে অবরোধ। যার জেরে জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ গিয়ে আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা। কালিয়াচক থানার পুলিশ জানিয়েছে, ‘‘অভিযুক্তেরা ফেরার। তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন