গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার মালদহ জেলায় ডেঙ্গি মোকাবিলায় আগাম মাঠে নামতে চলেছে স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে দুই পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক-কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। সাধারণত গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশার দৌরাত্ম্য শুরু হয়। তাই সাবধানের মার নেই এটা মাথায় রেখে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকেই কাজ শুরু করতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘রক্ত পরীক্ষার কিট আগে থেকেই মেডিক্যালে মজুত আছে।’’
গতবার মশাবাহিত রোগে জেলায় সব থেকেবেশি ভুগেছিল কালিয়াচক ১ ব্লক। তারপরেই ইংরেজবাজার পুরসভা। ওই পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ জানান, শহরের সমস্ত নিকাশি নালা সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ফগিং ও মশা মারার তেল স্প্রে-র প্রস্তুতি নিয়েছে পুরসভা। সেই সঙ্গে সচেতনতার প্রচারও হবে।
মে মাসের প্রথম দিন থেকে ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা মাসে দু’বার করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেউ জ্বরে আক্রান্ত কি না, সে ব্যাপারে খোঁজ নেবেন। সেই তথ্য অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
মালদহ জেলায় ২০১৩ সালে ১৬ জন, ২০১৪ সালে ১৪ জন, ২০১৫ সালে ৪৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। ২০১৬ সালে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে হয় ১২৪৮ জন। তাঁদের রক্ত পরীক্ষা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তার মধ্যে ৬৪১ জন রোগীকে চিহ্নিত করা যায়। বাকি ৬০৭ জন রোগীর পরে কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। অভিযোগ, তারা মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করিয়ে রক্ত পরীক্ষা করলেও তাঁদের ঠিকানা হাসপাতালে ছিল না। ফলে তাঁরা পরবর্তীতে কোথায় চিকিৎসা করেছেন বা কোথায় ভর্তি হয়েছেন সেই তথ্য স্বাস্থ্য দফতরে নেই। তা স্বীকারও করেন দিলীপবাবু।
এ বার কী হবে? মেডিক্যাল কলেজের সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘গত বছর বহির্বিভাগে রক্ত পরীক্ষার সময় ঠিকানা না নিয়ে ভুল হয়েছিল। এ বার ঠিকানা নেওয়া হবে।’’ তবে বেসরকারি মতে, আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। কারণ, বেসরকারি নার্সিংহোমগুলিতে যে রোগীরা রক্ত পরীক্ষা করেছিলেন, তার হিসেব স্বাস্থ্য দফতরে এই পরিসংখ্যানে নেই।