ভীত: সাহায্যের আশায় রাবেয়া ও অামনুরা। নিজস্ব চিত্র
এখনও কোনও সমস্যার সমাধান হয়নি। অন্তত তেমনই অভিযোগ রাবেয়া খাতুনের দুই বোন আমনুরা খাতুন এবং সামিলা খাতুনের। গত ২২ ফেব্রুয়ারি হেমতাবাদে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় নিরাপত্তা বেষ্টণী পেড়িয়ে মঞ্চে উঠে পড়েছিল দুই বোন রাবেয়া খাতুন এবং অামনুরা খাতুন। তা নিয়ে হইচই পড়ে। বাবার খুনিদের শাস্তি এবং সরকারি চাকরির দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।
সোমবার কর্ণজোড়ায় জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনার সঙ্গে দেখা করে রাবেয়ার দুই বোন দাবি করেন, তাঁদের বাবার খুনিরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে আতঙ্কে থাকতে হয় পরিবারের লোকদের। সেই সঙ্গে সরকারি চাকরি না-পাওয়ায় মা, নয় বোন এবং তিন ভাই নিয়ে চরম অসুবিধার মধ্যে তাঁরা রয়েছেন বলে অভিযোগ।
উত্তর দিনাজপুর জেলার রসাখোয়ার ছাগলকাটি গ্রামের বাসিন্দা ওই পরিবারটি। এদিন আমনুরা বলেন, ‘‘মায়ের কাছ থেকে জমি রেজিস্ট্রি করে নিতে চেয়েছিল অভিযুক্তরা। বাবা না দেওয়ায় তাকে ঘরে ঢুকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছিল। এখনও আমাদের উপরে অত্যাচার চালাতে চাইছে। আমরা কী করে চলাফেরা করব? কী করে বাঁচতে পারব?’’ সামিলা বলেন, ‘‘এই জন্যই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে চেয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে জেলাশাসককেও বলেছিলাম। এদিন ফের জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানালাম।’’ জেলাশাসক জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চয়ই দেখা হবে।
বসতবাড়ির জমি দখলের চেষ্টায় অভিযুক্তরা রাবেয়াদের বাবা মফিজুদ্দিন শেখকে ২০১৫ সালের এপ্রিলে খুন হতে হয়েছিল বলে অভিযোগ। পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হচ্ছে না দেখে এ বছরের গোড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন রাবেয়ারা। একাধিকবার নবান্নে, কালীঘাটে এবং তৃণমূল ভবনে গিয়ে দেখা করার চেষ্টা করেন বলে দাবি করেছেন রাবেয়া, আমনুরা, সামিলারা। কিন্তু তাঁদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি বলে দাবি। এর পর হেমতাবাদে মুখ্যমন্ত্রীর সফরে সময় মঞ্চে উঠে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানান।
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে মঞ্চে ওঠার জন্য তাঁদের অবশ্য শাস্তির কোপে পড়তে হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই। তবে চিকিৎসার জন্য তাঁদের হাসপাতালে ২ মার্চ পর্যন্ত রেখে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রশাসনিক প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরে রাবেয়াকে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ওয়ার্ড গার্লের কাজ দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়ি থেকে এত দূরে যাতায়াত করে যে টাকা পান তা দিয়ে চলে না। সামিলা বলেন, ‘‘৬ বোনের চাকরির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। অন্তত ৩ জনের চাকরি দেওয়া হোক।’’ তবে সরকারি প্রকল্পে মাস কয়েক আগে একটি পাকা ঘর তৈরি হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘সরকারি চাকরি এ ভাবে দেওয়া মুশকিল। সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা যাতে তাঁরা পান দেখা হবে।’’