ক্ষতির আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের

বন্ধ পথ, পাহাড়ে সঙ্কটে আনাজপাতির সরবরাহ

ধসে পাহাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় শাক, সব্জি, মাছ, ফলের মতো খাদ্য সামগ্রী নিযে পাহাড়ে গাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়েছে। পাহাড়ে ওই সমস্ত পণ্য যায় শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার থেকেই। এই পরিস্থিতিতে সরবরাহের অভাবে পাহাড়ে ওই সমস্ত জিনিসের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৫ ০১:২৫
Share:

ধসে পাহাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় শাক, সব্জি, মাছ, ফলের মতো খাদ্য সামগ্রী নিযে পাহাড়ে গাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়েছে। পাহাড়ে ওই সমস্ত পণ্য যায় শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার থেকেই। এই পরিস্থিতিতে সরবরাহের অভাবে পাহাড়ে ওই সমস্ত জিনিসের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতিদিন অন্তত দুই কোটি টাকার সব্জি, ফল সরবরাহ হয় এই বাজার থেকে। দৈনিক মাছ যায় ১ কোটি টাকারও বেশি। যার ৩৫ শতাংশরও বেশি ব্যবসা হয় পাহাড়ের সঙ্গে। ধসের জন্য রাস্তা আটকে থাকায় তাই নিয়ন্ত্রিত বাজারের ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

Advertisement

তা ছাড়া, অফ সিজনে স্কোয়াশ, আদা, গাজর, ফুলকপির মতো সব্জি পাহাড় থেকে সমতলে এই বাজারে আসে। সেখান থেকে পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা হোল সেলে কেনেন। ওই সমস্ত সব্জিও পাহাড় থেকে আসছে না। তাতে উভয় সঙ্কটই দেখা দিয়েছে। পাহাড়ের ব্যবসায়ীদেরও কারবার কার্যত বন্ধ হয়ে রয়েছে। নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির তরফেই জানানো হয় দৈনিক অন্তত ১ কোটি টাকার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই বাজারে প্রতিদিন যে মাছ কেনাবেচা হয় তার ৬০ শতাংশ যায় পাহাড়ে।

গত মঙ্গলবার থেকেই ধসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মিরিক, কার্শিয়াং, দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা। রোহিনী হয়ে কার্শিয়াং, দার্জির্লিঙের রাস্তা খোলায় শুক্রবার, শনিবার দুই একটি গাড়ি পণ্য নিয়ে উঠছে। তবে অধিকাংশ গাড়িই পরিস্থিতির জেরে পাহাড়মুখি হতেই চাইছে না। আচমকা কোথায় ধস নেমে মাঝপথে পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়েই থাকতে হবে এই আশঙ্কায়। সিকিম পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাতে আনাজপাতি থেকে মাছ, বিভিন্ন ফল সরবরাহ ব্যাহত হয়ে পড়েছে। সমীম নাথ, ভোলা গুপ্তের মতো পাহাড়ের কয়েক জন ব্যবসায়ীরা জানান, পরিস্থিতির জন্য তাঁরাও পণ্য বোঝাই গাড়ি পাহাড়ে আনতে বা সেখান থেকে স্কোয়াশ, গাজর পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না। কোনও কারণে রাস্তায় পণ্য নিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে হলে বহু টাকার লোকসান হবে।

Advertisement

শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল কমিশন এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি শিবকুমার, প্রাক্তন সভাপতি তপন সাহারা জানান, পাহাড়ে সাধারণত ৮ থেকে ১০ টনের পণ্য নিয়ে চলাচল করে। কিন্তু পরিস্থিতির জেরে পাছে মাঝপথে আটকে থাকতে হয় সেই ভয়ে গাড়িতে পণ্য সরবরাহের কাজ তেমন হচ্ছে না। হোলসেল ফিশ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর সভাপতি বাপি চৌধুরী এবং ব্যবসার অংশীদার জে পি সিংহ জানান, গত বুধবার তাদের একটি গাড়ি মাছ নিয়ে সিকিমের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। এক দিন মাঝপথে আটকে থাকার পর গাড়ি ফিরিয়ে আনতে হয়েছে। কম দামে বাজারে ওই মাছ বিক্রি করে দিতে হয়েছে। পাহাড়ে রাস্তা বিশেষ করে সিকিমের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে থাকায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে। যেটুকু স্থানীয় বাজারে সরবরাহ হয় তার উপরেই গত কয়েকদিন ধরে কারবার চলছে।

দ্রুত ধস সরিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না-হলে আনাজপাতি, থেকে মাছ এ সমস্ত সরবরাহ করা নিয়ে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়বে। বাসিন্দাদের দুভোর্গের পাশাপাশি ক্ষতিরমুখে পড়বেন পাহাড় সমতল উভয় এলাকার ব্যবসায়ীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন