মাছের বাজারে অচ্ছে দিন, ইলিশ বিকোচ্ছে জলের দরে

পুজোর সময় ব্রহ্মপুত্রের ইলিশ ঢুকেছিল জলপাইগুড়ির বাজারে। পেটে ডিম। সেই ইলিশ বিক্রি হয়েছে গড়পরতা এগারোশো থেকে বারোশো টাকায়।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:১৩
Share:

সমস্যা: জলপাইগুড়ি স্টেশন বাজারে মাছ-ব্যবসায়ী। —নিজস্ব চিত্র

মাত্র কয়েক দিনের পার্থক্য। বারোশো টাকা কেজি দরের ইলিশ নেমেছে কেজিতে পাঁচশো টাকায়। তাই জলপাইগুড়ি স্টেশন বাজারে ঢুকতেই ক্রেতাদের কানে আসছে নতুন সব হাঁকডাক। এক দোকানি জোর গলায় বলছিলেন, “মাছ বিক্রি হচ্ছে জলের দামে।” পাশ থেকে আর এক দোকানির মন্তব্য “আসুন দাদা, মাছ বাজারে অচ্ছে দিন।” মাছের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন পুজোর পর চাহিদা কমাতেই মাছের দাম কমেছে। ছট পুজো পর্যন্ত মাছের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

পুজোর সময় ব্রহ্মপুত্রের ইলিশ ঢুকেছিল জলপাইগুড়ির বাজারে। পেটে ডিম। সেই ইলিশ বিক্রি হয়েছে গড়পরতা এগারোশো থেকে বারোশো টাকায়। অষ্টমীর সকালে তো শহরের দিনবাজারে পনেরোশো টাকা দরেও ইলিশ বিক্রি হয়েছে। এ দিন ইলিশের দাম শুরু হয়েছে কেজি প্রতি ছ’শো টাকায়। দরদাম করে পাঁচশো এমনকি তার কমেও ইলিশ পেয়েছেন ক্রেতারা। কাতলের দাম পুজোর সময় ছিল ৭০০ টাকা, এ দিন সেই কাতল বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা কেজিতে। পনেরোশো টাকা কেজির চিতল নেমেছে আটশো টাকায়। স্টেশন বাজারের বিক্রেতা রাজেশ শাহ বলেন, “ক্রেতারাও মজা করে কিনছেন। কেউ ধরুন শুধু কাতল নিতে এসেছেন, দাম শুনে আড় পাবদা সবই অল্প করে নিয়ে গেলেন। তবে বেশিরভাগ ক্রেতাই দাম শুনে ইলিশে হাত বাড়াচ্ছেন।”

ক্রেতাদের সংখ্যাও কম। অন্য দিন জলপাইগুড়ির স্টেশন বাজারে ঠেলাঠেলি চলে। এ দিন কয়েকজন ক্রেতাকে দেখে গেল বাইক নিয়ে বাজারের ভিতরে ঢুকে গিয়েছেন। দিন বাজারের বড় মাছের দোকানগুলিতে লাইন দিতে হত। এ দিন সে লাইন উধাও। দিন বাজারের ব্যবসায়ী মান্না সরকারের কথায়, “গত বুধবার লক্ষ্মীপুজো হয়েছে। তার পর থেকে বাজার ফাঁকা। সে কারণে শুধু মাছ কেন সব জিনিসেরই দাম কমেছে।”

Advertisement

সে তুলনায় মাছের দাম কমার হার বেশি। কেন?

কারণ ব্যাখ্যা করলেন পাইকারি মাছ বিক্রেতা মিঠু শাহ। মাছ পচনশীল। একবার বাজারে নিয়ে বসলে তা ফেরত নিয়ে যাওয়া অনেকসময়েই সম্ভব হয় না। মিঠুবাবু বললেন, “সে কারণে যত কম লাভেই হোক ব্যবসায়ীরা মাছ বিক্রি করে দিতে চান।” তেমনটাই মালুম হচ্ছে শুক্রবারের দামে। চিংড়ির দাম তিন দিনে কমেছে ৩০০ টাকা। এখন বাজারে চিংড়ি মিলছে ৫০০ টাকা কেজিতে। ছশো টাকা কেজির আড় মাছ ৪০০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বোয়ালও। পাবদা, সমুদ্রের পমফ্রেটের দামও চারশো, দরদাম করলে তার থেকেও কমে মিলছে বলে দাবি ক্রেতাদের অনেকেরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন