বেনিয়ম: শহরের মহানন্দা সেতু লাগোয়া এলাকায় উঠছে এমনই হোর্ডিং। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
শিলিগুড়িতে মহানন্দা দূষণ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের গ্রিন বেঞ্চে মামলা বিচারাধীন। সম্প্রতি তা নিয়ে পুরসভা-প্রশাসনের হলফনামাও তলব করেছে উচ্চ আদালত। এত সবের পরেও পুরসভার অনুমতি ছাড়াই সেই মহানন্দার বুকে প্রায় ৪ তলা উঁচু একাধিক বিশাল হোর্ডিং বসানোর কাজ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুরসভা কাজ বন্ধের নোটিস দিয়েছে। তবুও কী ভাবে কাজ চলছে, তা নিয়েই জনমানসে নানা সন্দেহ
দানা বাঁধছে।
বিষয়টি হাইকোর্টের গ্রিন বেঞ্চের নজরে আনতে ‘ভিডিও ফুটেজ’ দাখিল করার কথা জানিয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘মহানন্দার দূষণ নিয়ে মামলা চলছে। গ্রিন বেঞ্চ ভীষণ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেখানেই অনুমতি ছাড়া হোর্ডিং বসানো হচ্ছে দেখেও পুরসভা কেন নির্বিকার সেটাও খোলসা হওয়া দরকার। তথ্য-প্রমাণ সহ গ্রিন বেঞ্চকে জানাব।’’
তবে হোর্ডিং নির্মাতা সংস্থার পক্ষে প্রদীপ্ত সরকারের দাবি, ‘‘বৈধ অনুমতি নিয়েই হোর্ডিং বসানো হচ্ছে। পুরসভার কাছেও অনুমতির আবেদন করা হয়েছে।’’ কিন্তু, অনুমতি পাওয়ার আগেই সেতুর রেলিংয়ের গা ঘেঁষে দৈত্যাকৃতি হোর্ডিংয়ের লোহার খাঁচা তৈরি করা যায়? প্রদীপ্তবাবুর দাবি, ‘‘তাতে কোনও অসুবিধে নেই।’’
অথচ পুরসভার অফিসার-কর্মী ও কাউন্সিলরদের একাংশ জানান, অনুমতি পাওয়ার আগে কোনও ভাবেই লোহার স্তম্ভ বসানো যায় না। পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘পুর এলাকায় অনুমতি ছাড়া হোর্ডিং বসানো বেআইনি। মহানন্দা নদীর মতো স্পর্শকাতর জায়গায় অনুমতির আগেই বিশালকায় হোর্ডিংয়ের খাঁচা তৈরিটা বরদাস্ত করা হবে না। কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’
মহানন্দা সেতু ধরে শিলিগুড়ি শহর থেকে প্রধাননগরের দিকে যেতে বাঁ দিকে একটি ও ডান দিকে দু’টি হোর্ডিংয়ের খাঁচা তৈরি হচ্ছে। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির একাধিক ইঞ্জিনিয়র জানান, সেতুর বুকে অত বড় লোহার খাঁচা বসানোর সময়ে মহানন্দার বন্যাপ্রবণতার কথা মাথায় রাখা উচিত ছিল। কারণ, বন্যা হলে হোর্ডিং কোনও কারণে ভাঙলে রেলিং সহ গোটা সেতুর ক্ষতি হতে পারে বলে ওই ইঞ্জিনিয়ররা জানান।
শিলিগুড়িতে নিত্য যাতায়াত করেন আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চের সভাপতি ল্যারি বসু। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীকে জানাব। সব পরিবেশকর্মী মিলে নদীকে বাঁচাতে হবে।’’