প্রস্তুতি: মহানন্দায় চলছে সাফাইয়ের কাজ। পাশাপাশি একাধিক জায়গায় উঠছে নদীর ঘাট দখল করে টাকা চাওয়ার অভিযোগও। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
মহানন্দা নদীর পাড়ে ছটঘাট দখল করে বিক্রি করা নিয়ে আগেই একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। সোমবার ঘাট দখল রুখতে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করলেন বাসিন্দারা। একই অভিযোগ করল তৃণমূলের একাংশও। পুলিশের সামনেই ঘাটদখলকারীরা পুণ্যার্থীদের কাছে এসে তোলা চেয়েছে বলে অভিযোগও উঠল। তবে কোনও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। এ দিনই ওই এলাকা ঘুরে দেখেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘ঘাট বিক্রির অভিযোগ আমার জানা নেই। পরিবেশ আদালতের নিয়ম মেনে পুজো হবে। পুলিশ ও প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’
আজ, মঙ্গলবার বিকেলে ছটপুজো। প্রায় এক সপ্তাহ থেকেই চম্পাসারি থেকে নৌকাঘাট পর্যন্ত এলাকায় নদীর ধার দখল করে রেখে তা পরে পুণ্যার্থীদের বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে মহানন্দার দুই নম্বর ব্রিজের কাছে ছটপুজোর ঘাট নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়েছিল। বর্গফুট হিসেবে ঘাট বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। এ দিন পুলিশের সামনেই ফের ঝামেলা হয়। শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সন্তোষ পাসোয়ান, চন্দ্রদেব সাহানি, সোনু শাহদের অভিযোগ, ‘‘৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু যুবক এসে ঘাটের জন্য তোলা চাইছে। প্রতি বর্গফুট হিসেবে টাকা দিতে হবে। পুলিশকে মৌখিকভাবে সব বলেছি।’’
সন্তোষের অভিযোগ, ‘‘এ দিন সকালে আমাদের কাছে দেড়-দু’হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। না হলে ঘাট ভেঙে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয়। পুজোর সময় ঝামেলা করব না বলে টাকা দিয়েছি।’’ আরও অভিযোগ, কারও কারও কাছ থেকে ৮০০-১০০০ টাকা অগ্রিম নিয়ে যায় ওই যুবকেরা। এরপরে তাঁরা অভিযোগ জানান ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা মনোজ বর্মাকে। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়ে পুলিশকে জানাই। এসবের বিরুদ্ধে সবার প্রতিবাদ করা উচিত।’’
পুজোর ঘাটের কাজ করতে আসা বাসিন্দারা জানান, শহরের সর্বত্র মহানন্দা নদীর দু’পাড় জুড়ে পুজো হয়। আর দু’পাড়েই এলাকার কিছু যুবক ঘাট দখল করে বিক্রি করেছে। টানা পুলিশি নজরদারি থাকলে এই ঘটনা এড়ানো যেত বলে দাবি বাসিন্দাদের। যা শুনে ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল বলেছেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ নেই। তবে আমরা নজরদারি রাখছি।’’ এ দিন সকালের অভিযোগের পর পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির ভ্যান এলাকায় ছিল। কিন্তু সন্ধের পরে আবার টাকা চাওয়ার অভিযোগ ওঠে।
রবিবার রাতে রাম নারায়ণ ঘাট লাগোয়া একটি ছটপুজো কমিটির বাঁধা মঞ্চের লাইট ভাঙচুর করে একদল দুষ্কৃতী। অভিযোগ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় এই কাজ করেছে দুষ্কৃতীরা। রাতেই কমিটি থানায় অভিযোগ করলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি।