দলনেত্রীর সিদ্ধান্তে অপমানিত হয়ে সম্প্রতি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী। কোন দলে যোগ দিচ্ছেন, তা নিয়েই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে কৌতুহল কম ছিল না। সমস্ত জল্পনা উড়িয়ে শুক্রবার নতুন দল করার তৈরির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন করিম চৌধুরী। এ দিন ইসলামপুরের মেলা মাঠ এলাকাতে গোলঘরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, এর আগে উত্তরবঙ্গ বিকাশ পার্টি তৈরি করেছিলেন তিনি। তবে এ বার বাংলা বিকাশবাদী কংগ্রেস নাম দিয়েই দল তৈরি করছেন। ১ বৈশাখ বাংলার নতুন বছরের প্রথম দিনই আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই দলের প্রতিষ্ঠা করবেন। তিনি জানান, এ দিনই নিজের ইস্তফাপত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির ঠিকানাতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এলাকার ৯ বারের বিধায়ক করিম চৌধুরী ইসলামপুরের প্রায় ৫০ বছরের বেশি সময়েই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দাবি, এলাকার মানুষ তাঁর সঙ্গেই রয়েছেন। করিম ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, বিভিন্ন দলের নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই প্রাক্তন মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। করিম চৌধুরী বলেন, ‘‘কিন্তু কোনও দলে সরাসরি যোগ নয়। কোনও দল সমর্থন চাইলে দলগত ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
গত বিধানসভা নির্বাচনে ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবালের কাছে প্রায় আট হাজার ভোটে হেরেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তবে হারের জন্য জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশকেই দায়ী করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি অমল আচার্য সহ অনেকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল নির্বাচনের সময়।’’
অমলবাবুর বক্তব্য, ‘‘ওঁকে জেতানোর ক্ষমতা যেমন আমার নেই, ওঁকে হারানোর ক্ষমতাও আমার নেই। উনি দল করেছেন তা করতেই পারেন।’’ অমলবাবু বলেন, ‘‘কলেজে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা সবাই দেখেছে। দলনেত্রী কোন দিনই এই ধরনের ঘটনা সহ্য করেন না। সে দলের যত বড়ই নেতা হোন না কেন।’’
প্রাক্তন মন্ত্রীর তৃণমূল ছাড়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চাকুলিয়ার বিধায়ক ফরওয়ার্ড ব্লকের আলি ইমরান রামজ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলে তাঁকে স্বাগত জানাই। তিনি দলে যোগ দিলে তাঁকে সামনে রেখেই আমরা ইসলামপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করব।’’
সম্প্রতি ইসলামপুর কলেজের নির্বাচনকে ঘিরে তৃণমূলের বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল ও চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের অনুগামীদের সঙ্গে গণ্ডগোল বাঁধে প্রাক্তন মন্ত্রী করিম চৌধুরীর অনুগামীদের। এই ঘটনার পরই প্রাক্তন মন্ত্রীকে কলেজের পরিচালন সমিতি থেকে বের করে তা ভেঙে দেওয়া হয়। এমনকি সরিয়ে ফেলা হয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে। এর পরই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রাক্তন মন্ত্রী।