ঝঁুকির সওয়ার। সোমবার ইসলামপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে যেখানে “নো হেলমেট নো পেট্রল” নিয়ম চালু হয়েছে সেখানে ব্যতিক্রম ইসলামপুর। এখানে এক দিকে যেমন বাইকে হেলমেট না পড়ে ওঠাই দস্তুর, তেমনই কোনও নিয়ম না মেনে একই বাইকে তিনজনের বেশি আরোহীর অবাধ যাতায়াতও শহরের পরিচিত দৃশ্য। শহরের বিভিন্ন এলাকাতে পুলিশ বাইকের উপর নজরদারি রাখলেও তাদের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দিব্যি ঘুরছে হেলমেট বিহীন বাইক আরোহীরা।
শহরের এই চিত্র নতুন নয়। ইসলামপুর শহর সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই বাইক নিয়ে শহরে ঢোকেন। কিন্তু তাদের মধ্যে বেশির ভাগই গাড়ির বৈধ কাগজতো দূরের কথা আরোহীরা হেলমেট পর্যন্ত পড়ে আসেন না বলে অভিযোগ। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পুলিশ কর্মীদেরও হেলমেট না পড়েই মোটরবাইক চালাতে দেখা যায়। বাসিন্দাদের দাবি, ঢিলেঢালা ট্রাফিক ব্যবস্থায়ই এর জন্য দায়ী। যদিও সোমবার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নাকা তল্লাশি শুরু করলেও হেলমেট বিহীন বাইক ঠেকাতে পারে নি পুলিশ। উত্তরদিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিত কুমার ভারত রাঠোর বলেন, ‘‘ইসলামপুর সহ জেলা জুড়ে ইতিমধ্যে অভিযান চলছে। সকলের ক্ষেত্রেই একই নিয়ম চালু রয়েছে।’’
এই শহরে যুবদের মধ্যে হেলমেটের অভ্যাস নেই বললেই চলে। কলেজ ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই হেলমেটকে বাড়তি বোঝা মনে করেন। দিনভর বাইক নিয়ে দাপিয়ে বেড়ালেও হেলমেট ব্যবহার করে না কেউই। ইসলামপুরের বাসিন্দা অমিত মজুমদার, রাজা বিশ্বাসরা বলেন, ‘‘শহরের বাইরে গেলে হেলমেটের প্রয়োজন হয়। শহরে কি আর হেলমেট পড়ব ?’’
অন্যদিকে পুলিশ কর্মীদের আবার অভিযোগ, শহরে বাইক ধরলে শান্তি নেই তাদের. রাজনৈতিক দলের নেতাদের ফোন চলে আসে বাইক ছাড়াতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মী বলেন, ‘‘হেলমেটতো দূরের কথা, বৈধ কাগজ দেখাতে না পারায় যদি ধরা হয় তবেও ফোনের পর ফোন আসতে থাকে বিভিন্ন নেতাদের। কাজেই অনেকের কম করে জরিমানা কাটতে হয়। অনেককে আবার জরিমানা না করেই ছাড়তে হয়।’’ হেলমেট ছাড়া ধরতে হল প্রচুর ধরা পড়বে সারা দিনে. ‘‘ইসলামপুরে হেলমেট ব্যবহার করে কজন?’’
অপর দিকে হেলমেট ছাড়া পেট্রল না দেওয়ার নিয়ম চালু হলে পুলিশ প্রহরা না থাকলে গন্ডগোল বেশি হবে ইসলামপুরের পাম্প গুলিতে। আশঙ্কা এক পেট্রল পাম্প মালিকের। ইসলামপুরের পেট্রলপাম্প মালিক রাজেশ অগ্রবাল বলেন, ‘‘শহরে হেলমেট পড়ার রেওয়াজ নেই। কাজেই তেল নিতে হেলমেটের চল হলে গন্ডগোলতো হবেই। পুলিশ যদি শুরু থেকে কিছুদিন নিয়মিত ভাবে নজরদারি করে তাহলে ওই সমস্যা এড়ানো যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা।