জট কাটাতে প্রস্তাব দেবে শিল্প বৈঠক

আগামী ৫ ডিসেম্বর শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়ির একটি হোটেলে বসতে চলছে ‘নর্থ বেঙ্গল বিজনেস কনক্লেভ’। রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী অমিত মিত্র উপস্থিত থাকবেন।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:১১
Share:

প্রতি বছর সরকারি সহযোগিতায় শিল্পপতিদের নিয়ে নিয়ম করে হয় বাণিজ্য ‘সামিট বা কনক্লেভ’। কিন্তু শিল্পপতিদের অনেকেরই জমি জট থেকে বিদ্যুৎ, প্রযুক্তি থেকে বিভিন্ন ছাড়পত্র নিয়ে নানা সমস্যা রয়ে যায় তিমিরেই।

Advertisement

আগামী ৫ ডিসেম্বর শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়ির একটি হোটেলে বসতে চলছে ‘নর্থ বেঙ্গল বিজনেস কনক্লেভ’। রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী অমিত মিত্র উপস্থিত থাকবেন। সেখানে এ বার ব্যবসায়ী, উদ্যোগীদের সমস্যাগুলিকেই বেশি করে তুলে ধরতে চাইছে কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের (সিআইআই) সদস্যরা। উত্তরবঙ্গের ৮ জেলার গত এক বছরের শিল্পের খতিয়ান, বিনিয়োগ সম্ভাবনা, সমস্যা নিয়ে আলোচনার পরে বিস্তারিত রির্পোট শিল্পমন্ত্রীর হাত ধরে পৌঁছবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। যা পরবর্তীতে সামনে আসবে, আগামী জানুয়ারির বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট ২০১৮-এর মাধ্যমে।

উত্তরবঙ্গের শিল্পদ্যোগীরা অনেকেই জানিয়েছেন, এ অঞ্চলের শিল্পতালুকগুলি নিয়ে সমস্যা চলছে। প্রশাসন জমি বাজার দরে বিক্রির পক্ষপাতী। তা কিনে কেউ কারখানা করলে, আবেদনের ভিত্তিতে বিভিন্ন ছাড়, ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। অথচ তালুকের জমির দাম কমানো হচ্ছে না। ভর্তুকি কমিয়ে জমিতে ছাড় দিলে তালুকগুলির জমি বিঘার পর বিঘা পড়ে থাকত না। ইসলামপুরের দু’টি, শিলিগুড়ির দু’টি, আলিপুরদুয়ার, আমবাড়ি, চকচকা, মালদহ মিলিয়ে উত্তরবঙ্গে একাধিক শিল্পতালুক রয়েছে। উদ্যোগীরা জানান, কারখানার অভাবে অনেক জায়গার রাস্তা, নর্দমা, বিদ্যুতের মতো পরিকাঠামো নষ্ট হতে বসেছে।

Advertisement

তেমনিই, আলিপুরদুয়ারের বেশিরভাগ খাস জমি। তাতে কারখানা হলেও জমির চরিত্র বদল না হওয়ায় ব্যাঙ্ক ঋণ, সরকারি নথিভুক্তকরণ হচ্ছে না। আবার কোচবিহারকে ‘ই’ ক্যাটাগরির শিল্পজেলা ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে সঠিক ভাবে কারখানা, শিল্প করলে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা ফেরত পাওয়া যায়। কিন্তু এর সঠিক প্রচার নেই। বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়েও সমস্যা রয়েছে। বহু জায়গায় লো ভোল্টেজ। খোদ মুখ্যমন্ত্রী এই নিয়ে বারবার মুখ খুলেছেন। এমনকী, সম্প্রতি হয়ে যাওয়া প্রশাসনিক বৈঠকেও বলেছেন। আবার শিল্পের জন্য দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ারও প্রয়োজন আছে। সেই সংক্রান্ত ছাড়পত্র যাতে তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়, তা নিয়েও মুখ খুলেছেন কেউ কেউ। পাশাপাশি এখানকার জনপ্রিয় হর্টিকালচারে বিনিয়োগের ৫০ শতাংশ টাকা ফেরত পাওয়া যায়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের অনেকে তা জানেনই না।

এ বার ভুট্টা, চালকল থেকে হেরিটেজ পর্যটন, ইট, টাইলস, কৃষি ভিত্তিক শিল্প, কোল্ড চেইন, হর্টিকালচার, চা বাগানের সরঞ্জাম, সার, ক্ষুদ্র ও মাঝারি, তথ্যপ্রযুক্তি এবং এডুকেশন হাব নিয়ে আলোচনা হবে কনক্লেভে। শিল্পোদ্যোগীরা জানান, গত পাঁচ বছর ধরে এমন সামিট হচ্ছে। সুফল মিলছে। যে সব জায়গায় জট রয়েছে, তা দ্রুত খোলার ব্যবস্থা করলে, সমস্যাগুলির নিয়মিত সমাধান হতে থাকলে বিনিয়োগ এমনিতেই বাড়বে।

সিআইআই-র নর্থ বেঙ্গল জোনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রমোদকুমার শাহ বা এগজিকিউটিভ কাউন্সিল সদস্য সঞ্জিৎ সাহা জানান, বাণিজ্য বৈঠকে বিনিয়োগ নিয়ে তো আলোচনা থাকবেই। সরকারের সামনে সমস্যাগুলিকে ফের তুলে ধরাও হবে অন্যতম লক্ষ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন