তিন দিনের বন্ধ ঘিরে মোয়ামারিতে প্রকট হল শাসক দলের কাজিয়া। সন্ত্রাস করে তৃণমূলের একাংশ বন্ধ সফল করেছে বলে এলাকার মানুষ যে অভিযোগ তুলেছে, তা সমর্থন করেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের ঘনিষ্ঠরাও।
তিন দিন পরে সবে আতঙ্ক কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন। তারই মধ্যে ফের কোচবিহারের মোয়ামারিতে বন্ধের হুমকি দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের একাংশ। এমন বার্তা শুনে উদ্বিগ্ন এলাকার মানুষ। দোমুখা বাজারে জিনিস কিনতে এসেছিলেন রতন বর্মন। বললেন, “তিন দিন বাজার বন্ধ ছিল। কোনও রকমে চলেছে। তৃণমূলের লোকজন নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে। সেখানে আমরা কী অপরাধ করলাম যে, আমাদের হয়রানির মধ্যে পড়তে হবে!”
মোয়ামারি অঞ্চলের তৃণমূলের নেতারা সন্ত্রাসের কথা মানতেই চাননি। ওই অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি চন্দন গোস্বামী বলেন, “মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বন্ধ করছে। মিথ্যে অভিযোগে দলের অঞ্চল সভাপতি সত্তর বছরের বসিরুদ্দিন মিয়াঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এটা কেউই মানতে পারছে না। এর প্রতিবাদে প্রয়োজনে আমরা আবার বন্ধ ডাকব।” ওই এলাকার তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী সরাসরি ওই বনধের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, “বন্ধ করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া অবস্থানের পরও এমন ভাবে বন্ধ করে মানুষের হয়রানি মানা যায় না।” তাঁর ঘনিষ্ঠ প্রবাল গোস্বামী বলেন, “এলাকায় মানুষকে ভয় দেখিয়ে দোকান, স্কুল, অফিস বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আমরা বন্ধের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে রাস্তায় নেমেছি।”
কয়েক দিন আগে মোয়ামারিতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিরোধ চরম জায়গায় পৌঁছয়। কোচবিহার ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি খাদিজা বিবির স্বামী-সহ পাঁচ জনকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে বসিরদ্দিন মিয়াঁ ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। বসিরুদ্দিন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস করছে বলে বহু দিনের অভিযোগ। এর পরেই গত শনিবার রাতে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। কোতোয়ালি থানার আইসি সমীর পালের বদলির দাবি করে মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের বন্ধ ডাকে অঞ্চল সভাপতির অনুগামীরা।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।