প্রতীকী চিত্র
আগামী ডিসেম্বরে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি দিয়ে ট্রেন চালাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ, এমনই খবর এসেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তাদের কাছে। রেল সূত্রের খবর, বাংলাদেশের চিলাহাটির সঙ্গে হলদিবাড়ির রেল যোগাযোগের পরিকাঠামো তৈরি হতে যতটুকু বাকি রয়েছে, তা বাংলাদেশের দিকেই। চিলাহাটি দিয়ে ট্রেন ভারতে ঢুকে প্রথমেই হলদিবাড়ি স্টেশন। তার পরে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন হয়ে এনজেপি যাবে ওই ট্রেন। হলদিবাড়ি এবং জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের পরিকাঠামো তৈরি। বাকি রয়েছে শুধু ‘নো-ম্যানস ল্যান্ড’ এলাকায় রেললাইন পাতা। এই অংশে ভারত এবং বাংলাদেশ দুই দেশের রেল যৌথ ভাবে কাজ করবে। বাংলাদেশের চিলাহাটি স্টেশন থেকে সীমান্ত পর্যন্ত রেললাইন পাতার কাজ শেষ হলে ‘নো ম্যানস ল্যান্ডের’ অংশে কাজ শুরু হবে। সেখানে লাইন পাতা হলেই জুড়ে যাবে দু’দেশের রেলপথ। রেল সূত্রের খবর, সম্প্রতি বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী সে দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ডিসেম্বর মাসে এই লাইনের উদ্বোধন হবে। চিলাহাটি স্টেশনও পরিদর্শন হয়েছে কিছু দিন আগেই। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, “ডিসেম্বর মাস থেকে বাংলাদেশ রেল চলাচল শুরু করতে চায়, এমন খবর আমরাও শুনেছি। সরকারি ভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি। আমাদের অংশের পরিকাঠামোর প্রায় সবটুকু সেরে ফেলেছি। কোভিড পরিস্থিতিতে কাজ শেষ করতে বাড়তি সময় লেগেছে। যেটুকু কাজ বাকি, তা কিছু দিনের মধ্যেই শেষ করে দেওয়া যাবে।”
বাংলাদেশ থেকে রেলপথ জুড়ে হলদিবাড়ি দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে— এমন পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের। স্বাধীনতার আগে এই পথে দার্জিলিং মেলও চলাচল করত। ফের এই রেলপথ চালু করার ক্ষেত্রে পরিকাঠামো দিক দিয়ে একাধিক অন্তরায় ছিল। হলদিবাড়ি থেকে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার লাইন ছিল পুরনো। এই লাইনে বেশি গতির ট্রেন চালানো সম্ভব ছিল না। জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে ছিল মাত্র তিনটি লাইন। যার ফলে একসঙ্গে একাধিক ট্রেন চলে এলে দাঁড়ানোর জায়গা দিতে গিয়ে মূল লাইন বন্ধ হওয়ার জোগাড় হত। দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মের পরিকাঠামো ছিল না। সব থেকে বড় কথা, জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা ছিল না। এমন লাইন দিয়ে তাই আর্ন্তজাতিক রুটের ট্রেন চালানো সম্ভব ছিল না। গত কয়েক মাসে সব ক’টি পরিকাঠামোই করেছে রেল।
রেল সূত্রের খবর, এই লাইনে দু’দেশের মধ্যে প্রথমে পণ্যবাহী ট্রেন যাতায়াত শুরু করবে। এই পথে সরাসরি কলকাতার সঙ্গেও ট্রেন চলাচল সম্ভব। যাত্রী-বাহী ট্রেন চালানোর বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে বলে রেল কর্তাদের দাবি। রেলের এক আধিকারিকের কথায়, “একবার রেল চলাচল শুরু হয়ে গেলে অনেক পদক্ষেপই করা হতে পারে।”