রেফার নিয়ে ফের একবার কাঠগড়ায় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল৷ কোনও কারণ ছাড়াই ওই হাসপাতালে ভর্তি এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে৷ অথচ, মেডিক্যাল কলেজের বদলে ওই গৃহবধূকে স্থানীয় এক নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে, সেখানে খানিক ক্ষণের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ ভাবে এক শিশুপুত্রের জন্ম দেন তিনি৷
এই অবস্থায় বধূর বাড়ির লোকেরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তাহলে কি ধরে নিতে হবে জেলা হাসপাতালের থেকে শহরের ওপর থাকা নার্সিংহোমগুলির চিকিৎসা পরিকাঠামো ভাল? না কি এর পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য কাজ করছে? যদিও ঘটনায় ক্ষুব্ধ জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন ইতিমধ্যেই একটি কমিটি গড়ে ঘটনার তদন্ত করতে সিএমওএইচকে নির্দেশ দিয়েছেন৷ সিএমওএইচ জগন্নাথ সরকার জানিয়েছেন, তারা বিষয়ডটি তদন্ত করে দেখছেন৷
জানা গিয়েছে, গত বুধবার কোনপাকরির সরকার পাড়া এলাকার বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ পিঙ্কি রায় শারীরিক কিছু সমস্যা নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন৷ পিঙ্কির স্বামী কল্যাণ রায়ের অভিযোগ, ‘‘শনিবার রাত ন’টা নাগাদ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আচমকা জানান, আমার স্ত্রীর অবস্থা খারাপ৷ তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যেতে হবে৷ কিন্তু আমার স্ত্রীর অবস্থা ততটা খারাপ ছিল না৷ তাই চিকিৎসককে রেফার না করার অনুরোধ করি৷ কিন্তু উনি তা শোনেননি৷ বাধ্য হয়ে বাবুপাড়া এলাকার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাই৷ সেখানে ঘন্টা দেড়েকের মধ্যে আমার স্ত্রী পুত্র সন্তানের জন্ম দেন৷’’
কল্যাণবাবুর অভিযোগ, কোন কারণ ছাড়াই কেন তাঁর স্ত্রীকে রেফার করা হয়েছে৷ যেখানে হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনা খরচে তাঁর স্ত্রীর সন্তান প্রসব সম্ভব ছিল, সেখানে বেসরকারি নার্সিংহোমে তাতে খরচ পড়ে গেল ৩৬ হাজার টাকা৷ কল্যাণবাবুর দাদা বঙ্কিম রায় বলেন, ‘‘আমার ভাই সামান্য চা শ্রমিক৷ রাতের বেলায় পাগলের মতো এর-ওর কাছে হাত পেতে ৩৬ হাজার টাকা জোগাড় করে৷’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বিজয়বাবুর কাছেও লিখিত অভিযোগ করেন কল্যাণবাবু৷ বিজয়বাবুর সাফ কথা, এটা অন্যায় হয়েছে৷ কোনও ভাবেই এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না৷ আমি সিএমওএইচকে কমিটি গড়ে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি৷
সিএমওএইচ জগন্নাথ সরকার বলেন, ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷