পরিকল্পনা করেই তাদের ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হস্টেলে মৃত ছাত্রের পরিবারের৷ মৃত্যুর তদন্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন তারা ৷ গুরুত্ব বুঝে এ দিনই ময়নাতদন্তের জন্য ওই ছাত্রের দেহ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়েছে পুলিশ৷
সোমবার দুপুরে জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হস্টেলে নিজের ঘর থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় রবি গুপ্ত নামে চতুর্থ বর্ষের ওই ছাত্রকে৷ সহপাঠীরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ ওই দিনই পুরুলিয়ায় তাঁর বাড়ির লোকেদের খবর দেওয়া হয়৷ এ দিন সকালে ছাত্রের বাবা ও জ্যাঠা জলপাইগুড়িতে পৌঁছোন৷ মর্গে গিয়ে রবির দেহ দেখার পর তার জ্যাঠা অশ্বিনী কুমার গুপ্ত বলেন, ‘‘রবির সহপাঠীদের থেকে শুনলাম উদ্ধারের সময় সে উপর হয়ে শুয়েছিল৷ তাঁর নাক ও মুখের পাশে রক্তের দাগও রয়েছে৷ তাঁকে পরিকল্পনা করে খুন করা হতে পারে৷ রবির বাবা কিশোরকুমার গুপ্তও বলেন, ‘‘নাক ও মুখের পাশে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ হচ্ছে৷’’
তাঁরা জানিয়েছেন, ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ রবিবার রাত আটটা নাগাদ মায়ের সঙ্গে শেষবার কথা বলেন রবি৷ সেই সময় কোনও শারীরিক সমস্যার কথা সে বলেনি৷ জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে রবিবার বাড়ির লোকেরা ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানান৷ অশ্বিনীবাবু বলেন, ‘‘একটা সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এমন ঘটনা ঘটে যাওয়া খুবই লজ্জার৷ আমরা চাই ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে চাপ দিন৷’’
জলপাইগুড়ির পুলিশ কর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, গোটা ঘটনাটিকেই তাঁরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন৷ পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “সে জন্যই ছাত্রের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি৷ তবে ছাত্রের বাড়ির লোকেরা লিখিত ভাবে খুনের অভিযোগ করলে আমরা খুনের মামলা শুরু করব৷” জানা গিয়েছে ঘটনার প্রকৃত তদন্ত চেয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ছাত্রের পরিবার। তবে তাতে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
কলেজের অধ্যক্ষ অমিতাভ রায় অবশ্য বলেন, “এই কলেজের ছাত্ররা বেশির ভাগই গরিব ঘরের৷ জীবনে বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই তাঁরা এখানে আসেন৷ ওই ছাত্রকে কেউ খুন করেছে বলে আমার মনে হয় না।”