দুর্যোগ: বন্যায় এমনই অবস্থা কেরলে। নিজস্ব চিত্র
সামনেই বকরি ইদ। এই সময়ে ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া ঘরের ছেলেরা ফেরেন। অপেক্ষা করে তাঁদের পরিবার। কিন্তু এ বার তাতেই বাদ সেধেছে বৃষ্টি। কেরলে প্রবল বর্ষণে ফিরতে পারছেন না অনেকেই।
দিনহাটার কয়েকটি গ্রামের ছেলেরা কেরলে গিয়েছেন। তাঁদের বাড়ির লোকেরা জানাচ্ছেন, ইদে বাড়ি আসার সময় তাঁরা কয়েক মাসের জমানো রোজগারের টাকাও আনেন। সেই টাকার জন্য অপেক্ষা করে থাকে কারও ঘরদোর সারানো, কারও পড়াশোনার খরচ, বাড়ির কারও বিয়ে কিংবা কারও বা চাষের প্রয়োজন। কিন্তু এখন সে সব ভুলেছেন তাঁরা। অপেক্ষা করছেন, কবে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরবেন।
রবিবার কেরলের কল্লমের কুন্দরা থেকে রাহান সরকার বলেন, “চারদিকে শুধু জল আর জল। ইদে ফেরার ইচ্ছে ছিল। আর হল না।” রাহানদের বাড়ি দিনহাটার বাত্রীগছে। তাঁর দাদা রৌশন সরকার বললেন, “খুব চিন্তায় আছি। ভাই আরও কয়েক জনের সঙ্গে সেখানে থাকেন। বাড়ি ফিরলেই নিশ্চিন্ত হতে পারতাম।” রাহানের মা রোশনা সরকার বলেন, “ছেলের সঙ্গে প্রতি দিন আট দশবার কথা বলছি। কবে ফিরবে, ভয় কাটবে।”
সাদিয়ার মিয়াঁ, আনারুল মিয়াঁ, আটকে গিয়েছেন। কুন্দরা এলাকায় একটি কাজুবাদামের কারখানায় কাজ করেন তাঁরা। কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সাত দিন ধরে কারখানা বন্ধ। কেউ বাজারে যেতেও পারছেন না। ঘরে মজুত খাবার দিয়েই চলছে।
ইডুক্কি জেলার মেরিকাণ্ডমে থাকেন ওই এলাকারই আর এক বাসিন্দা মানু মিয়াঁ। পাহাড়ি এলাকা। যান চলাচল বন্ধ। তিনি বলেন, “কাজ নেই। কত ক্ষণে বৃষ্টি কমবে তার অপেক্ষায় আছি।” তাঁর বাবা আব্দুল সামাদের কথায়, “পাঁচ মাস ধরে বাড়ির বাইরে ছেলে। ইদে ফিরবে ভেবেছিলাম, এখন তার আশায় বসে আছি। বন্যা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বারবার শুধু ফোন করছি। ফোনের অপেক্ষায় রয়েছি।”