প্রতীকী ছবি।
শীত আসতেই শুরু হয়েছে চড়ুইভাতির তোড়জোড়। কিন্তু জেলার অন্যতম সেরা চড়ুইভাতির জায়গারই বেহাল দশা।
উত্তর দিনাজপুরের কুলিক পক্ষীনিবাসের অসংরক্ষিত এলাকার পিকনিক স্পটটিতে শীতকাল এলেই ভিড় জমে। কেবল জেলার বিভিন্ন এলাকাই নয়, আশপাশের জেলা থেকেও অনেক দল আসে পিকনিক করতে। সেই জায়গাটিই এ বারের শীতের মরসুমে এখনও অবধি বেহাল বলে ক্ষোভ বাসিন্দাদের।
চারিদিকে গজিয়ে উঠেছে আগাছার জঙ্গল। যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনা ও বিভিন্ন প্রাণীর মল। বাসিন্দাদের জন্য তৈরি করা শৌচাগার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা সঙ্গীন। তাঁদের বসার ও অপেক্ষা করার শেডযুক্ত ও শেডহীন একাধিক কংক্রিটের বেঞ্চ ভেঙে গিয়েছে। অভিযোগ, বন দফতরের গাফিলতিতে ছ’মাসেরও বেশি সময় ধরে পিকনিক স্পটটির এই দশা। তাই পিকনিকের মরসুমের ক্ষুব্ধ জেলাবাসী। রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক দীপর্ণ দত্তের দাবি, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। চলতি বছরে পিকনিক শুরু হওয়ার আগেই পিকনিক স্পটটির সার্বিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে।
পরিবেশ দূষণ রুখতে ও পরিযায়ী পাখিদের অবাধ বিচরণের স্বার্থে ২০০৮ সালে কুলিক পক্ষিনিবাসের সংরক্ষিত এলাকায় পিকনিক নিষিদ্ধ করে বন দফতর। তবে বাসিন্দারা যাতে পিকনিক করতে পারেন, সে জন্য ২০১০ সালে পক্ষিনিবাসের অসংরক্ষিত এলাকার ২৫ বিঘা জমিতে পিকনিক স্পট গড়ে তোলা হয়। পিকনিক স্পটের কয়েকশো বড় গাছের নীচে বাসিন্দাদের জন্য শৌচাগার ও পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল। তাঁদের বসার ও অপেক্ষা করার জন্য সেখানে শেডযুক্ত ও শেডহীন একাধিক কংক্রিটের বেঞ্চও তৈরি করা হয়।
প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দুই দিনাজপুর ও মালদহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা পিকনিক করতে ওই পিকনিক স্পটে ভিড় জমান বলে বন দফতর সূত্রের খবর। এখন পিকনিক স্পটে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য চারটি পৃথক শৌচাগারের দরজা ভএঙে পড়েছে। পানীয় জল সরবরাহের ১০টি ট্যাপকল ও পানীয় জল তোলার পাম্পও বিকল। তাই পিকনিক করতে আসা বাসিন্দাদের ভোগান্তির শিকার হতে হবে বলেই এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন।
শহরের বাসিন্দারাও তাই দ্রুত পিকনিক স্পটটির হাল ফেরানোর দাবি তুলেছেন। রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী ও রায়গঞ্জ পিপল ফর অ্যানিম্যালের সভাপতি ভীমনারায়ণ মিত্রের ক্ষোভ, ‘‘বন দফতরের গাফিলতি না থাকলে দীর্ঘদিন ধরে পিকনিক স্পটটি বেহাল হয়ে পড়ে থাকত না। মরসুমের মুখে কেন স্পটটির পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করা হচ্ছে না, সেটা ভেবেই অবাক হচ্ছি।’’