ভিড় ছাড়াই পথে বিজেপি

মিছিলে লোক এত কম কেন? মালতীদেবীর জবাব,  “এটা তো শুধু পদাধিকারীদের মিছিল। জেলা ও মণ্ডলের পদাধিকারী রয়েছেন।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৬:৪৭
Share:

ফাইল চিত্র

তখন দুপুর ১২টা। বিজেপির মিছিল বের হওয়ার কথা জেলা পার্টি অফিস থেকে। পার্টির অফিসের সামনের রাস্তা কিন্তু তখনও খাঁ খাঁ করছে। অফিসের ভিতরে অবশ্য জনা পঞ্চাশেক লোক বসে ছিলেন। নিজের অফিস ঘর থেকে কোচবিহার জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতী রাভা মিছিলের সময় পিছিয়ে দিলেন আরও এক ঘণ্টা। জানিয়ে দিলেন, মিছিল বেরোবে ১টায়। তার পরেও অফিস ঘর থেকে বার বার খোঁজ চলল, “লোক কী হয়েছে?” সবাই যেন আর একটু অপেক্ষা করতে চায়। তার মধ্যে আরও কয়েক জন হাজিরও হলেন। তাঁদের নিয়েই অবশেষে মিছিল হল। বড়জোর তিনশো জন ছিলেন মিছিলে। বেশিরভাগই কোচবিহার শহরতলির বাসিন্দা।

Advertisement

মিছিলে লোক এত কম কেন? মালতীদেবীর জবাব, “এটা তো শুধু পদাধিকারীদের মিছিল। জেলা ও মণ্ডলের পদাধিকারী রয়েছেন।” পাঁচ রাজ্যের ফলের প্রভাব কী মিছিলে পড়েছে? প্রশ্ন শুনে মুচকি হেসে বিজেপি সভানেত্রী বলেন, “একেবারেই নয়। ওই রাজ্যগুলির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না।”

গ্রাম থেকে আসা কয়েক জন কর্মী অবশ্য স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন, পাঁচ রাজ্যের ফলের প্রভাবেই অনেকেই বিজেপির মিছিলে পা মেলাননি। কেউ হতাশ, কেউ ভয় পেয়েছেন। ঘোকসাডাঙা থেকে মিছিলে যোগ দেওয়া এক কর্মীর কথায়, “ওই পাঁচ রাজ্যের ফল বেরোনোর পর বাইক মিছিল বের করে তৃণমূল। বিজেপি কর্মীদের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। তাই কেউই মিছিলে আসতে চাইছিলেন না।” দিনহাটার এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, “অমিত শাহের সভার দিন ভিড়ে থিকথিক করছিলও। পাঁচ রাজ্যে হারার পরে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন। কেন্দ্রে ফের ক্ষমতায় না ফিরলে রাজ্যে আসবে কী করে?” জেলা বিজেপির নেতা বিরাজ বসু অবশ্য জোর দিয়েই বলেন, “কেন্দ্রে তো বিজেপি ফিরবেই, এ রাজ্যেও আগামী বিধানসভাতেই বিজেপি আসবে। হতাশ কেউ হননি। সবাই সময়ের অপেক্ষা করছেন।”

Advertisement

গত ৭ ডিসেম্বর কোচবিহারের ঝিনাইডাঙা থেকে অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপির গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। অনুমতি না মেলায় অবশেষে তা বাতিল হলেও সেখানে একটি সভা করে বিজেপি। তাতে ভিড় হয়েছিল নজরে পড়ার মতো। তার পরেই ১২ ডিসেম্বর গণতন্ত্র বাঁচাও কর্মসূচি ষড়যন্ত্র করে বানচাল করার অভিযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিছিলের ডাক দেয় বিজেপি।

বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির আশা ছিল ১১ ডিসেম্বরের বিধানসভা ফলে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীশগঢ় বিজেপির দখলেই থাকবে। তাই এ দিনের মিছিলে সেই ফলের আনন্দেই মেতে উঠবেন বিজেপি কর্মীরা। মিছিলে মানুষের স্রোত বইবে। কিন্তু ফল বেরোনোর পরে বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারেন, ওই ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। তাই জেলার সমস্ত নেতাকে ওই মিছিলে হাঁটার নির্দেশ দেওয়া হয়। তার পরেও অবশ্য জমে ওঠেনি মিছিল।

এক বিজেপি কর্মী মিছিলে হাঁটতে হাঁটতেই আক্ষেপ করছিলেন, “যতটা এগিয়েছিলাম, ততটাই যেন পিছিয়ে পড়লাম।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সবাই জানেন বিজেপি লোকসভাতেও পরাজিত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন