বিচারকের বদলির দাবিতে টানা ছ’দিন ধরে কর্মবিরতি চালাচ্ছেন মালদহ জেলা ও দায়রা আদালতের আইনজীবীরা। এই কর্মবিরতির জেরে চরম বিপাকে পড়েছেন বিচারপ্রার্থীরা। বিচারের জন্য আদালতে এসে বারবার ফিরতে হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, এমনিতেই জেলা ও দায়েরা আদালতে মামলার চাপ বেশি থাকে। তারপর ছ’দিন ধরে কর্মবিরতি চলায় পরিস্থিতি আরও সঙ্গীন হয়ে উঠেছে। কত দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সেদিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছেন বিচারপ্রার্থীরা।
এ দিকে দাবি মানা না হলে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মালদহ বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরা। মালদহ বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীর ঝা বলেন, ‘‘আমাদের জেলা জজ আইনজীবীদের সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করেন না। এমনকী, আইনজীবীদের তিনি গুরুত্ব দিতেও চান না। ফলে বহু মামলার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। আমরা উনার বদলি চাই।’’ বদলি না হলে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রবীর বাবু।
মালদহের জেলা ও দায়রা আদালতে দৈনিক গড়ে প্রায় ৪০টির মতো মামলার শুনানি হয়। অন্তবর্তী জামিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন মামলায় জামিনের আবেদন করতে পারেন বিচারপ্রার্থীরা। এছাড়া, নিম্ন আদালতের বিভিন্ন রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানিও হয় জেলা ও দায়রা আদালতে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার বিচার প্রক্রিয়াও চলে। কিন্তু জেলা ও দায়রা জজের বদলির দাবিতে আইনজীবীরা এককাট্টা হওয়ায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে আদালতের কাজকর্ম।
গত ২৯ জুলাই থেকে মালদহ বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরা জেলা ও দায়রা আদালত বয়কট করেছেন। হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা খাইরুল মিঞা বলেন, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরে পড়শিরা আমাদের নামে অভিযোগ করেছেন। সেই মামলায় জামিনের আবেদন করেছিলাম জেলা ও দায়েরা আদালতে। এ দিন ছিল সেই মামলার শুনানি। কিন্তু আদালতে কোনও কাজ না হওয়ায় মামলার শুনানি হল না। ফিরে যেতে হল আমাদের।’’ খয়রুল মিঞা একা নন, আদালতের কাজকর্ম থমকে যাওয়ায় দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে অনেককেই।
মালদহ আদালতের সরকারি আইনজীবী তীর্থ বসু বলেন, ‘‘এই আদালতে দিনে প্রচুর মামলার শুনানি হয়। কর্মবিরতির জেরে বিভিন্ন মামলার শুনানি পিছিয়ে যাচ্ছে। অনেকের ভোগান্তি হচ্ছে। আশা করি শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হবে।’’