পাহাড় নিয়ে বৈঠকে যেতে চায় বামেরা

পাহাড় সমস্যা মেটাতে বিমল গুরুঙ্গকে নিয়েই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবি তুলেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। এ বার পাহাড়ের আন্দোলনের সময় বিভিন্ন মামলায় সকল জেলবন্দিদের মুক্তি দিয়ে বৈঠকের দাবিতে সরব হলেন সিপিএমের দার্জিলিং জেলার নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১০
Share:

পাশাপাশি: অশোক ভট্টাচার্য ও জীবেশ সরকার। নিজস্ব চিত্র

পাহাড় সমস্যা মেটাতে বিমল গুরুঙ্গকে নিয়েই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবি তুলেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। এ বার পাহাড়ের আন্দোলনের সময় বিভিন্ন মামলায় সকল জেলবন্দিদের মুক্তি দিয়ে বৈঠকের দাবিতে সরব হলেন সিপিএমের দার্জিলিং জেলার নেতারা।

Advertisement

শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর সর্বদল বৈঠকে সব দলের সঙ্গে আমন্ত্রণ পেলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছেও প্রকাশ করলেন সিপিএম নেতারা। যা শুনে শাসক দলের নেতারা বলেছেন, ‘‘উত্তরকন্যায় এক দফায় সর্বদল বৈঠকে তো ওদের ডাকা হয়েছিল। তখন বড় বড় কথা বলে সভা বয়কট করে। এখন পাহাড়ের আইন শৃঙ্খলার সমস্যা মিটেছে, প্রশাসনিক বোর্ড কাজ করছে। তাই আবার পাহাড়ে প্রাসঙ্গিক হওয়ার চেষ্টা করছেন বাম নেতারা। রাজনীতি ছাড়া বামেরা কিছুই করলেন না।’’

মঙ্গলবার দুপুরে দলের তরফে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য এবং নব নির্বাচিত জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার একযোগে ওই দাবির কথা জানান। অশোকবাবু বলেন, ‘‘পাহাড়ের আন্দোলনকারীদের মুক্তি দিতে হবে। বিমল গুরুঙ্গ-সহ সব দলকে বৈঠকে ডাকতে হবে। আমরাও তাতে যোগ দিতে চাই। সিপিএম আলাদা রাজ্যের বিরোধী। আমরা সেখানে সংবিধান স্বীকৃত ষষ্ঠ তফশিলের মত সর্বোচ্চ স্বায়ত্বশাসন চাই।’’

Advertisement

এর পরেই তিনি দাবি করেন, পাহাড় নিয়ে তাঁদের যা অভিজ্ঞতা রয়েছে, তা কোনও দলের নেই। আলোচনায় তা তো কাজে লাগতেই পারে। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্য দুই পক্ষকেই একযোগে বৈঠক করাটা প্রয়োজন। বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপাদের নামেও তো মামলা রয়েছে। তাহলে বিমল গুরুঙ্গ নয় কেন!’’

পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবির সঙ্গে নেপালি ভাষাকে পাহাড়ে সরকারি ভাষা হিসাবে বরাবর রাখার কথাও বলেছেন সিপিএম নেতারা। অশোকবাবু বলেন, ‘‘আমরা পাহাড় পরিস্থিতি নিয়ে জেলা সম্মেলনে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পঞ্চায়েত স্তর থেকে মানুষের সরকারি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ জরুরি। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচন দরকার। তেমনিই, সরকারি ভাষার আইন অনুসারে নেপালিকেই পাহাড়ে ১ নম্বর ভাষা হিসাবে রাখতে হবে।’’ তাঁদের মতে, জাতিগত, সংস্কৃতিগত, ভাষাগত বিষয়গুলিকে মাথা রেখেই সমস্যা মেটানো দরকার। জোরজবরদস্তি, দমন পীড়নের রাজনীতি করে নয়।

পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলির নেতারা জানাচ্ছেন, সিপিএমের পাহাড়ে সংগঠন এখন নেই বললেই চলে। নিজেরাও গত কয়েক বছরে কিছুই করতে পারেননি। সেখানে বৈঠকে ডাকা হলে, পাহাড়বাসীর কাছে তাদের প্রাসঙ্গিক হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকবে। নতুন করে পাহাড়ে কর্মসূচি, বাগানে সংগঠন করতে পারবেন নেতারা। তাই তৃণমূল বিরোধী বিমল গুরুঙ্গের পক্ষে কথা বলা ছাড়া আরও নেপালি-হিন্দি স্কুল, পরীক্ষায় নেপালি প্রশ্নপত্র, জেলবন্দিদের মুক্তির মত দাবি তুলেছে।

জীবেশবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য বলছে পাহাড়ে তো স্বাভাবিক হয়েছে। তাই সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে স্থায়ী সমাধান বার হোক। আর পঞ্চায়েত তো বটেই সময়মত জিটিএ নির্বাচনও করানো দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন