পায়ের ছাপে চিতাবাঘের আতঙ্ক গ্রামে

নদী-চা বাগান জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়াতে বেশি সময় লাগেনি। দিনভর গ্রামের বাসিন্দারা ছোটদের বাড়ি থেকে বের হতে দেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩৬
Share:

ভয়: চিতাবাঘের আতঙ্ক জলপাইগু়ড়ির ঘোষপাড়ায়। মাটিতে পায়ের ছাপ দেখাচ্ছেন আতঙ্কিত গ্রামবাসী। ছবি: সন্দীপ পাল

বেড়া দিয়ে ঘেরা মুরগির খাঁচার পাশে ভোররাতের দিকে খসখস শব্দ শোনা গিয়েছিল বাড়ির ভিতর থেকে। ভোরবেলায় সেখানে ভেজা মাটিতে বড়বড় পায়ের ছাপ দেখতে পান বাসিন্দারা। মঙ্গলবার সকালে সেই ছাপ দেখেই আতঙ্ক ছড়ায় পাতকাটার ঘোষপাড়ায়। বাসিন্দাদের দাবি, ওই পায়ের ছাপ চিতাবাঘের।

Advertisement

নদী-চা বাগান জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়াতে বেশি সময় লাগেনি। দিনভর গ্রামের বাসিন্দারা ছোটদের বাড়ি থেকে বের হতে দেননি। বাড়ির উঠোনেই বেঁধে রাখা হয় গবাদি পশু। দুপুরে বন দফতরের বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের দল যায় পাতকাটার গ্রামে। পরীক্ষা করে বন দফতরও জানায়, পায়ের ছাপটি চিতাবাঘের হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে বন দফতর।

ওই গ্রাম থেকে জলপাইগুড়ি শহরের দূরত্ব মেরেকেটে দশ কিলোমিটার। ফলে ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের ভিতরে চিতাবাঘ ঢুকে পড়লে তার জলপাইগুড়ি শহরে পৌঁছতে বেশি সময় লাগবে না বলে মনে করছেন বনকর্মীরাও। পাতকাটায় চিতাবাঘ বেরিয়েছে এমন কথা চাউর হয়ে যায় শহরের মাসকলাইবাড়ি এবং শান্তিপাড়ায়। আতঙ্ক ছড়ায় সেখানেও। এ দিন পাতকাটায় গিয়েছিলেন বন দফতরের রামসাইয়ের বিট অফিসার ভূপতি শীল।

Advertisement

পাতকাটা গ্রামের একদিকে রয়েছে তিস্তা নদী। তার পাশ দিয়ে বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল। নদীতে এখন তেমন জল নেই। ফলে জঙ্গল পেরিয়ে নদীর সুখা খাত দিয়ে সহজেই গ্রামে প্রাণীটি ঢুকে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা গ্রামবাসীদের। গ্রামের আরও কয়েকটি জায়গায় এমন পায়ের ছাপ মিলেছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের।

বনকর্মীদের সন্দেহ, জঙ্গল থেকে বেরিয়ে গভীর রাতে গ্রামে ঢুকেছিল চিতাবাঘটি। সকাল হওয়ায় সেটি চা বাগানের দিকে ঢুকেছে। বনকর্মীরা গ্রামে রাতে টহল দেবেন বলে জানিয়েছেন। এডিএফও রাজু দাসের কথায়, “আরও একদিন দেখা হবে। তারপরে খাঁচা বসানো হবে।”

ঘোষপাড়ার দিপালী সেনের বাডির পিছনে প্রথমে পায়ের ছাপ দেখা যায়। বাড়িটি বেড়া দিয়ে ঘেরা। বেড়ার পিছনে ছিল পায়ের ছাপ। বাসিন্দাদের সন্দেহ প্রাণীটি বাড়ির ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। দরজা বন্ধ থাকায় সেটি পিছনে চলে যায়। পায়ের ছাপ মিলেছে আলের জমিতেও। দিপালী দেবী বলেন, “যে বেড়ার পাশে পায়ের ছাপ মিলেছিল, তার ওপারেই আমার মুরগির খাঁচা। হয়তো গন্ধ পেয়ে মুরগির লোভেই চিতাবাঘটি এসেছিল।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement