সাহায্য: বাসুদেবের পাশে ক্লাব কর্তা। নিজস্ব চিত্র
একমাত্র মেয়ের বিয়ে ঠিক করেও হতদরিদ্র বাবা বাসুদেব কর্মকার অর্থাভাবে রাতের ঘুম ছুটেছিল। তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত ছ’টি ক্লাব।
পাত্রপক্ষের তরফে কোনও দাবি ছিল না। তবুও নমো নমো করে বিয়ে অনুষ্ঠানের যে টুকু খরচ লাগে, তার কানাকড়িও ছিল না বাসুদেববাবুর কাছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের চকভৃগু অঞ্চলের গার্লসস্কুল পাড়ার বাসিন্দা বাসুদেববাবু কুঁড়ে ঘরের বাড়িতে কামারের কাজ করে সামান্য রোজগারে স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে তার নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা। খবর পেয়ে কন্যাদায়গ্রস্ত বাসুদেববাবুর পাশে দাঁড়ালো রাজ্য সরকার থেকে আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত স্থানীয় ৬টি ক্লাব এবং হিলি বহির্বাণিজ্য সংস্থা। রবিবার ক্লাবগুলি তাদের মিলিতভাবে সংগৃহীত ৭৩ হাজার টাকা বাসুদেববাবুর হাতে তুলে দিলেন। স্থানীয় চকভৃগুর বিবেকানন্দ ক্লাব তাদের উৎসব ভবনটি বিনামূল্যে বিয়ে অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য দিয়েছে। আজ, সোমবার রাতে ওই উৎসব ভবনে বাসুদেববাবুর মেয়ে তনুশ্রী এবং মাহিনগর এলাকার পাত্র শ্রীদাম কর্মকারের চার হাত এক হবে। আলোর রোশনাইয়ে অনুষ্ঠান করে বিয়ের আয়োজনে হাসি ফুটেছে হতদরিদ্র কর্মকার পরিবারে।
সামান্য রোজগারে বাসুদেববাবু ও সীমাদেবী, একমাত্র মেয়ে তনুশ্রীকে কলেজে পাঠিয়ে অর্থাভাবে আর পড়া চালিয়ে উঠতে পারছিলেন না। বিএ দ্বিতীয়বর্ষে পাঠরত তনুশ্রীর দুমাস আগে বালুরঘাটের মাহিনগরের কৃষক বলরাম কর্মকারের ছোট ছেলে শ্রীদামের সঙ্গে বিয়ে পাকা হয়। কিন্তু সামান্য বিয়ে অনুষ্ঠানের টাকা ঘরে ছিলনা বাসুদববাবুর। পাত্রের বাবা বলরামবাবুর কথায়, কোনও পণ নয়। লালপেড়ে শাড়ি শাখা পরিয়ে বউমাকে ছেলের হাতে তুলে দিতে বেয়াইকে আশ্বস্ত করেছিলাম। দিন আনা বাসুদেববাবু ও সীমাদেবীর কাছে কাছে বিয়ে খরচের যতসামান্য টাকাও জোগার করে উঠতে পারছিলেন না।
হতদরিদ্র ওই পরিবারের অসহায় অবস্হার কথা জেনে এগিয়ে আসেন স্থানীয় সমাজকর্মী দেবপ্রিয় সমাজদার।