ফের খুন মালদহের কালিয়াচকের নওদা যদুপুরে। ফের কাঠগড়ায় এলাকার দুই ত্রাস বকুল ও জাকির শেখের লড়াই।
বুধবার সন্ধে ছটা নাগাদ স্থানীয় সালেপুর গ্রামে বকুল ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে জাকির শেখের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে মৃতদেহ ফেলে রেখে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসী। পরে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় মালদহ মেডিক্যালে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম জাব্বার শেখ (২৬)। তাঁর বাড়ি সাতঘরিয়া গ্রামে। মৃত জাব্বার শেখও ফেরার ছিল বলে দাবি পুলিশের। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘মৃতদেহ উদ্ধার করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগেই জাকির ঘনিষ্ঠ ইব্রাহিম শেখের স্কুলপড়ুয়া ছেলে সাবির মোমিনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনাতেও অভিযুক্ত ছিল বকুল। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পুলিশের উপরেও হামলা চালানোরও অভিযোগ ওঠে বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের খুনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধেবেলা জাতীয় সড়কের ধারে একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন জাব্বার। সেই সময় দুটি মোটরবাইকে করে পাঁচ যুবক এলাকায় গুলি ও বোমাবাজি করতে শুরু করে। বাসিন্দারা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে জাব্বারকে ঘিরে ধরে পরপর পাঁচটি গুলি করে দুষ্কৃতীরা। তারপরে দুষ্কৃতীরা গ্রামে ফের দুটি বোমা মেরে পালিয়ে যায়। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। সন্ধে ছটা থেকে সাতটা পর্যন্ত গ্রামবাসীরা মৃতদেহ জাতীয় সড়কের উপরে রেখে বিক্ষোভ দেখান। তার জেরে জাতীয় সড়কে ব্যাপক যানজট হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে এলাকা দখল নিয়ে বকুল শেখ এবং জাকির শেখের মধ্যে লড়াই চলছে। এর জেরে একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তবুও তাঁদের নাগাল পাচ্ছে না পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। নওদা যদুপুরের পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের তথা বকুল শেখের ভ্রাতৃবধূ ফারানা বিবি বলেন, ‘‘পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জন্য দুষ্কৃতীদের কার্যকলাপ বেড়ে গিয়েছে। এদিন জাকির শেখের দলবল দিনের আলোতে গ্রামে ঢুকে এক যুবককে গুলি করে খুন করে চলে গেল।’’ ওই অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি তথা জাকির শেখের ঘনিষ্ঠ গোলাম কিবরিয়ার পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ছিনতাই এর টাকা ভাগাভাগি নিয়ে খুন হয়েছে। পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, জাব্বারের বিরুদ্ধে খুন, বোমাবাজি, তোলাবাজি-সহ একাধিক মামলা ছিল। তবে এ দিন কী কারনে তাঁকে খুন করা হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।