লাল কাপড়ে বেঁচে গেল ট্রেন

নিয়মিত নজরদারি চললেও শুক্রবারের ঘটনায় যে বিপদ হতে পারত, তা কার্যত মেনে নিয়েছে রেলও। শুক্রবার রাত আটটার বদলে দার্জিলিং মেল এনজেপি থেকে ছাড়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা দেরিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০৩:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রবল বৃষ্টিতে হলদিবাড়ি ও জলপাইগুড়ি স্টেশনের মাঝে কাশিয়াবাড়ি হল্ট স্টেশনের কাছে হঠাৎ রেললাইন ধসে গিয়ে বিপত্তি বাধল। শুক্রবারের ওই ঘটনায় আটকে গিয়েছিল হলদিবাড়ি-এনজেপি প্যাসেঞ্জার। তার জেরে শুক্রবার আড়াই ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে শিয়ালদহগামী দার্জিলিং মেল। হলদিবাড়ি থেকে আসা ওই লিঙ্ক ট্রেনের সঙ্গেই দার্জিলিং মেলের তিনটি কামরা আসে। রেল সূত্রের দাবি, বৃষ্টিতে লাইনের মাটি ধসে গিয়েছিল। স্থানীয়রা লাল কাপড় দেখিয়ে ট্রেনটি আটকান। তা না হলে বড় বিপদ হতে পারত দার্জিলিং মেলের যাত্রীদেরও।

Advertisement

নিয়মিত নজরদারি চললেও শুক্রবারের ঘটনায় যে বিপদ হতে পারত, তা কার্যত মেনে নিয়েছে রেলও। শুক্রবার রাত আটটার বদলে দার্জিলিং মেল এনজেপি থেকে ছাড়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা দেরিতে। এর জন্য ওই স্টেশনে বিক্ষোভও দেখান যাত্রীরা। রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে একটু দেরি হয়েছে দার্জিলিং মেলের। ট্র্যাকের নজরদারি চলে। কিন্তু হঠাৎ করে এ রকম ঘটনা ঘটে যাওয়ায় রেলের আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকে না।’’

রেলের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, হলদিবাড়ি-এনজেপি প্যাসেঞ্জারে দার্জিলিং মেলের একটি এসি ও দুটি স্লিপার কোচ থাকে। সেটি শুক্রবার ৫টা ১০-এ রওনা হয়েছিল। বিকেল ৬টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দারা জানতে পারেন, কাশিয়াবাড়ির কাছে প্রায় ২ ফুট মতো অংশে লাইনের তলায় মাটি, পাথর সরে গিয়েছে বৃষ্টিতে। তাঁরাই ঘটনাস্থলের বেশ কিছুটা আগে লাল কাপড় দেখাতে থাকেন। চালক তা দেখে ইমারজেন্সি ব্রেক কষে ট্রেন থামান। রেল সূত্রে দাবি, চালক নেমে ঘটনাস্থলটি দেখে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে খবর দেন। তার পরে বিশেষজ্ঞরা এসে লাইন মেরামত করে ট্রেন ছাড়তে প্রায় দু’ঘণ্টা গেলে যায়।

Advertisement

রেলের কর্তারা জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে পাইলট ইঞ্জিন দিয়ে আগাম নজরদারি রাখা হয় লাইনে। বিশেষ করে অসম এবং ঝাড়খণ্ডের মতো কিছু উপদ্রুত এলাকায় এই কাজ করে রেল। কিন্তু সাধারণ ট্র্যাকের ক্ষেত্রে গ্যাংম্যানদের নজরদারির উপর ভরসা রেখেই চালানো হয় ট্রেন। এ ক্ষেত্রে কেন তা তাদের নজরে এল না? রেল সূত্রে দাবি, গ্যাংম্যান নিয়মিতভাবেই নজরদার চালান। কিন্তু পাহাড়ি নদীতে অল্প সময়ের প্রবল বৃষ্টিতে একসঙ্গে অনেক জল নেমে এলে আচমকা বিপদ ঘটতে পারে। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। গ্যাংম্যান চলে যাওয়ার পরই ঘটনাটা ঘটেছে বলে দাবি রেল আধিকারিকদের। তাও ঘটনা নিয়ে একটি রিপোর্ট কাটিহার ডিভিশনের সদর দফতরে জমা করতে বলা হয়েছে। রেল অনেক ক্ষেত্রে আধুনিক হলেও গ্যাংম্যান দিয়ে নজরদারির সাবেক রীতি কেন এখনও রয়েছে, এই ঘটনার পরে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে রেল আধিকারিকদের মধ্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন