Balabhut

Erosion: পাঁচ নদীতে রক্ষে নেই, বালাভূতে বাঁধ নির্মাণে হাত লাগালেন স্থানীয়রাই

গদাধর, কালাজনী, তোর্সা, ঘরঘরিয়া এবং রায়ঢাক—পাঁচ নদীর মিলনস্থল বালাভূত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২১ ২১:১০
Share:
Advertisement

বছরের পর বছর ধরে এমনটাই চলে আসছে। সব হারিয়ে এক বার ঘুরে দাঁড়ান। আবার সব তলিয়ে যায় জলে। ফের নতুন করে লড়াই শুরু হয়। কিন্তু সাত পুরুষের ভিটেমাটির মায়া ত্যাগ করে নড়তে পারেন না। বিহিত চেয়ে বার বার কড়া নাড়েন প্রশাসনের দরজায়। কিন্তু সুরাহা হয় না। কোদাল, ঝুড়ি নিয়ে এ বার নিজেরাই বাঁধ নির্মাণের কাজে নেমে পড়লেন। আর তাতেই টনক নড়ল প্রশাসনের।

পূ্রব বাংলার গা ঘেঁষে থাকা কোচবিহারের বালাভূত চর। গদাধর, কালাজনী, তোর্সা, ঘরঘরিয়া এবং রায়ঢাক—পাঁচ নদীর মিলনস্থল। চরের উর্বর মাটিতে চাষাবাদ ভালই হয়। সংসার চালাতে তাই তেমন অসুবিধা হয় না। কিন্তু যেই না ভারী বৃষ্টি নামে, অমনি তলিয়ে যায় বিঘের পর বিঘে জমি এবং লোকালয়। নদীর গ্রাস থেকে পিছোতে পিছতে একেবারে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে গোটা গ্রাম। পোক্ত বাঁধ নির্মাণের কথা বার বার বলে এলেও, হেলদোল দেখায়নি প্রশাসন। মাঝে কাজ শুরু হলেও, অর্ধেক হয়ে পড়েছিল।

Advertisement

কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রকোপ কাটতে না কাটতেই নিম্নচাপের আশঙ্কা নেমে এসেছে। বুধবার তাই নিজেরাই বাঁধ নির্মাণে নেমে পড়েন এলাকাবাসী। তাতেই টনক নড়ে তুফআনগঞ্জ ১ নম্বর ব্লক প্রশাসনের। পাথর, বালি, প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো হয় বাঁধ নির্মাণের জন্য।

এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। তিনি বলেন, ‘‘এখানে নদীর ভাঙন নতুন নয়। ২০১৭-য় ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। প্রায় ৩০০ পরিবারের ভিটেমাটি নদীগর্ভে চলে যায়। বালাভূতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষের বাস। সকলেই কৃষিনির্ভর। প্রতি বছর চাষের জমি তলিয়ে যায়। একটি মাধ্যমিক এবং একটি অঙ্গনওয়াড়ি স্কুলও তলিয়ে গিয়েছে। বার বার বলা সত্ত্বেও বর্ষার আগে বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হচ্ছিল না।’’

Advertising
Advertising

অন্য এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘জমিজামা সব চলে গিয়েছে। বাঁধ না হলে, যেটুকু আছে, তা-ও থাকবে না। কী করে বাঁচব জানি না। জায়গা জমি চলে গেলেও, বাড়িটা অন্তত বাঁচুক। তাহলে বাইরে গিয়ে অন্তত খাটতে পারব। পাঁচটা নদী রয়েছে। সর্বনাশ করে দিচ্ছে।’’ তীর বরাবর ২০০ মিটার বাঁধ নির্মাণ হলেই সকলে বেঁচে যান বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
সর্বশেষ ভিডিয়ো
Advertisement