বৈঠক: পাঁচ জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা বিভাগীয় কমিশনারের। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
কাঁটাতারের ওপারে গ্রাম। কিন্তু সেগুলি দেশের অংশেই। এই সব গ্রামে গিয়ে এত দিন প্রচার ছিল রীতিমতো সমস্যার ব্যাপার। এ বারে যাতে কাঁটাতারের ওপারে থাকা এই সব ভারতীয় গ্রামে প্রচারে গিয়ে বিপদে না পড়েন নেতা-কর্মীরা, সে জন্য সচেষ্ট হল প্রশাসন। সোমবার জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে পাঁচ জেলা প্রশাসন এবং বিএসএফ, এসএসবি-র প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন উত্তরবঙ্গের বিভাগীয় কমিশনার অজিতরঞ্জন বর্ধন। সেই বৈঠকে ওই গ্রামগুলিতে প্রচারের সময়ে নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিএসএফ ও উত্তরবঙ্গের তিন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের।
কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে থাকা কোচবিহারে অন্তত ১৫টি গ্রাম রয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় সীমান্তবর্তী গ্রামের সংখ্যা প্রায় ৪০। কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বাংলাদেশের দিকে থাকা ওই সব ভারতীয় গ্রামে বেশি সংখ্যক লোক জড়ো হলে বাংলাদেশ প্রশাসনও খোঁজ শুরু করে, কখনও ধরপাকড়ও চালায়। এখন ভোট পর্যন্ত এই গ্রামগুলিতে যাতায়াতে সময়ের বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার কথাও ভাবছে প্রশাসন।
এই সুযোগে অবাঞ্ছিত কারও প্রবেশ আটকাতে তল্লাশি এবং পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এ ছাড়াও জলপাইগুড়ি জেলার বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায় ১৭ কিলোমিটার জুড়ে কোনও কাঁটাতারের বেড়া নেই। পুলওয়ামা কাণ্ডের পরে কেন্দ্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা সমীক্ষা চালিয়ে খোলা সীমান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। ভোটের আগে সেই এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর জন্যও বাংলাদেশ সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করতে বিএসএফ-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সোমবারের প্রশাসনিক বৈঠকে।
অবশ্য শুধু বাংলাদেশই নয়, এই ব্যাপারে নেপাল ও ভুটানের মতো পড়শি দেশের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিভাগীয় কমিশনার বলেছেন, ‘‘সীমান্ত এলাকায় যাতে সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়, তার ব্যবস্থা করতে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ, ভুটান এবং নেপাল— তিনটি আর্ন্তজাতিক সীমান্ত রয়েছে উত্তরবঙ্গের এই এলাকায়। সেই সব এলাকায় নজরদারি এবং ভোট প্রচার চালাতে যাতে কোনও ব্যাঘাত না আসে, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। ভবিষ্যতেও হবে।’’
ভোটের জন্য বিভিন্ন এলাকায় আধা সেনা নামানো হয়েছে। আধা সেনার তালিকায় বিএসএফ এবং এসএসবি রয়েছে। জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার থেকে কয়েক কোম্পানি বিএসএফ নিয়ে যাওয়া হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। ভোটের কাজে তাঁদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ দিনের বৈঠকে বিএসএফের কাছে জানতে চাওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে তাঁদের বাহিনীর সংখ্যা কি কম পড়তে পারে? বিএসএফের তরফে জানানো হয়, সীমান্তে নজরদারির জন্য পর্যাপ্ত বাহিনী রয়েছে। বেশি সংখ্যক বাহিনীকে ভোটের কাজে ছাড়া হবে না বলেও জানিয়েছে তারা।