নতমস্তক: রায়গঞ্জের সভায় অমিত শাহ। ছবি: সন্দীপ পাল
দাড়িভিট-কাণ্ড নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জে মার্চেন্ট ক্লাবের মাঠে বিজেপির নির্বাচনী সভা ছিল বৃহস্পতিবার। তবে রায়গঞ্জে অমিত সভা করলেও এ দিন সেখানে তাপস বর্মণ বা রাজেশ সরকারের বাবা-মায়েরা কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
অমিত বলেন, ‘‘ইসলামপুরে বাংলার শিক্ষাকে বাঁচাতে আমাদের দুই কার্যকর্তা ভাই তাপস এবং ভাই রাজেশকে মমতাদিদির পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। আর দোষ ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তার উপর চাপানো হচ্ছে। আমি আজ, রায়গঞ্জের মানুষেরর কাছে জানকে চাই, রাজেশ এবং তাপসের দোষ কী? ওরা চাইছে ইসলামপুরে বাংলায় মানুষ পড়বে উর্দুতে নয়। আপনারা কী চান? মমতা সরকার সারা রাজ্যে উর্দু ভাষা করতে চাইছে। আমি মমতাদিকে বলতে চাই, যত অত্যাচার করার করে নিন। ২৬ মে আপনার সরকারের মৃত্যুঘণ্টা বাজতে চলেছে।’’ এমনকি, বক্তব্যের শেষেও জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, ‘‘ভাই রাজেশ তাপসের হত্যার বদলা নেবেন তো?’’ জনতা সাড়া দিয়ে চিৎকার করেছে।
জেলায় অমিতের সভায় তাপস বা রাজেশের বাবা-মা কেউ না থাকা নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দাম বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে প্রধানমন্ত্রীর সভাতে তাঁরা গিয়েছিলেন। এ দিন ইসলামপুর থেকে তাই আর তাঁরা আসেননি।’’ মঞ্জু বর্মণ জানান, তিনি এবং তাপসের বোন অসুস্থ বলে তাঁরা যেতে পারেননি।
গত ২০ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে ছাত্র আন্দোলনের জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল দাড়িভিট হাইস্কুল। বাংলা শিক্ষকের বদলে উর্দু এবং সংস্কৃতর শিক্ষক নিয়োগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে পড়ুয়ার। পুলিশের গুলিতে দুই কলেজ ছাত্র তাপস এবং রাজেশের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তাকে তুলে ধরে বিজেপি ঘর গুছিয়েছে এলাকায়। অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল। রায়গঞ্জ লোকসভা আসনের নির্বাচনে সেটি সামনে তুলে ধরেছে বিজেপি নেতৃত্ব। তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় একদিন এসে হুঙ্কার ছেড়ে কোনও লাভ নেই। মানুষ তৃণমূলের পাশে রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে রয়েছে। উন্নয়নকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা এগিয়ে যেতে চায়।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন দাঁড়িভিট প্রসঙ্গ তুলেছেন বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীও। তিনি মুখ্যমন্ত্রীতে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘রাজেশ, তাপসের মৃত্যুর পর একদিনও মুখ্যমন্ত্রী ওই দুই তরুণের মায়েদের চোখের জলের শরিক হলেন না। ওই দুই তরুণের দেহ এখনও সৎকার হয়নি। দোলঞ্চা নদীর পাড়ে মাটি চাপা রাখা আছে। ওই দেহ তুলে হাপিস করতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আমি কথা দিচ্ছি, যদি সেখানে এক টুকরো হাড়ও থাকে ওই ঘটনার তদন্ত হবে।’’
এ দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধেই কার্যত সরব ছিলেন অমিত শাহ। বলেন, ‘‘মমতার সন্ত্রাস থেকে মোদীই বাঁচাতে পারে। মমতাদির দল টিএমসি মানে টিতে তুষ্টিকরণ, এমে মাফিয়া, আর সি’তে চিটফান্ড। মমতাদির মা, মাটি মানুষের কথা বলেছিল। মা থেকে এখন মমতা চলে গিয়েছে।মাটি অনুপ্রবেশকারীদেন বেচে দিয়েছে। মানুষ মানে তৃণমূল গুন্ডাতে বাসিন্দারা নাজেহাল।