নিস্তরঙ্গ: সামনে ভোট। তবুও নিরুত্তাপ কার্শিয়াং। রাস্তায় নেই কোনও ব্যানার-ফেস্টুন। নিজস্ব চিত্র
সকাল থেকেই চলছিল মেঘ-বৃষ্টির খেলা। টুরিস্ট লজের বারান্দা থেকে মেঘের আড়ালে উঁকি মারা পাহাড়ি ফুল লালগুরাসের ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন পর্যটকরা। তিনধারিয়ার দিকে যাওয়া টয় ট্রেনের কু ঝিক ঝিক আওয়াজ ছাড়া কার্শিয়াং শহরের কোথাও ছিল না মিছিল, স্লোগান বা নিদেনপক্ষে পোস্টারও। শহর ঘুরে বোঝার উপায় ছিল না, এ বারের ভোটে দার্জিলিং জয় সম্মানরক্ষার লড়াই হয়ে গিয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রের দুই শাসক দলের কাছে। রবিবার ছুটির দিনেও নিস্তেজ ছিল শহর।
পাহাড়ের রাজনীতিতে বরাবরই মুখ্য ভূমিকা নিয়েছে কার্শিয়াং। একসময় বিমল গুরুংয়ের শক্ত ঘাঁটিতে এখন বাড়তে শুরু করেছে তৃণমূল। অনীত থাপার পরে বিমলের কোর গ্রুপের নেতা প্রদীপ প্রধান বিনয়-শিবিরে নাম লেখানোয় কার্শিয়াংয়ে শক্তি বেড়েছে বিনয়পন্থী মোর্চারও। যদিও ভোট নিয়ে শহরজুড়েই থমথমে ভাব। মহকুমা হাসপাতালের কাছে স্টেশনারি দোকান আছে দীপক তামাংয়ের।
ভোটের হাওয়া কী বুঝছেন? নেপালি আর হিন্দি মিশিয়ে যে উত্তর দিলেন তার বাংলা মানে, ‘‘কেউ আর বোকা হতে চাইছেন না। তাই সবাই চুপচাপ। এ বার পরিস্থিতি অন্যরকম।’’ বড় ব্যানার, ফেস্টুন দূরের কথা, শহরের কোথাও দেখা যায়নি কোনও দলের পতাকাও। শহরের বিভিন্ন মোড়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেল, আলাদা দিনে তৃণমূল, বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও বিজেপির প্রার্থীরা শহরের রাস্তায় পদযাত্রা করেছেন। তার বাইরে এখনও পর্যন্ত কোনও দলের পক্ষ থেকেই কোনও সভা করা হয়নি। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অনীত থাপা অবশ্য জানিয়েছেন, চা বাগান-সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিনই তাঁদের ছোট ছোট বৈঠক হচ্ছে। অনীতের কথায়, ‘‘ঘরে ঘরে আমাদের পতাকা আছে। তাই আর বাইরে লাগানোর দরকার নেই।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সভাপতি এলবি রাই বলেন, ‘‘আমরা ছোট ছোট বৈঠক করছি। বড় সভা করার প্রস্তুতি চলছে।’’ বিজেপির পাহাড়ের সভাপতি মনোজ দেওয়ানও জানান, তাঁরা কার্শিয়াংয়ে প্রচার শুরু করেছেন। বাম প্রার্থী সমন পাঠকের দাবি, ‘‘বাগান এলাকায় বাড়ি বাড়ি প্রচার হয়েছে। ছাত্র ও যুব সংগঠনের পক্ষ থেকেও প্রচার করা হচ্ছে।’’