—ফাইল চিত্র।
আজ ‘ট্রেলার’ দেখালেন। এরপর সামসিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার দিন ‘সিনেমা’ দেখাবেন বলে জানিয়ে দিলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সভার ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে মালদহের চাঁচলের সেই কলমবাগানেই সোমবার পাল্টা সভা করলেন শুভেন্দু। কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে বললেন, ‘‘কংগ্রেস যদি বিজেপিকে রুখতে চাইত, তাহলে মালদহের চাঁচলে সভা করত না। হবিবপুরে করত। আসলে বিজেপিকে অক্সিজেন জুগিয়ে তৃণমূলকে দুর্বল করতে চাইছে কংগ্রেস।’’ এ ভাবেই কংগ্রেসকে বিদ্ধ করলেন পরিবহণমন্ত্রী। বিজেপিকে রুখতে যে মমতার কোনও বিকল্প নেই, বারেবারে তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
গত ২৩ তারিখ এখানেই জনসভা করেছিলেন রাহুল। এ দিন একই মাঠে সভার ডাক দেয় তৃণমূল। রাহুলের সভার মঞ্চ বা হেলিপ্যাডের ব্যরিকেড এখনও ভাঙা হয়নি। এ দিন হেলিকপ্টারেই মালদহ থেকে চাঁচলে আসেন শুভেন্দু। সভায় উত্তর ও দক্ষিণ মালদহের প্রার্থী মৌসম নুর ও মোয়াজ্জেম হোসেন ছাড়াও ছিলেন মন্ত্রী গোলাম রব্বানি, প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন, সমর মুখোপাধ্যায়। সভার ভিড় দেখে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কংগ্রেসের মতো রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, ফরাক্কা, বিহার বা ঝড়খণ্ড থেকে লোক নিয়ে আসিনি। তারপরেও ৪৮ ঘণ্টার নোটিসে সভা করে বুঝিয়ে দিলাম, এই মাটি এখন মমতার মাটি।’’ তারপরেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ও পরে কংগ্রেস বিজেপিকে সাহায্য করেছে। অনেক জায়গায় তারা মিলেমিশে বোর্ড গঠন করেছে। কংগ্রেসিরা সকালে বিজেপি করে আর সন্ধেয় কংগ্রেস করে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে মায়াবতী-অখিলেশ কংগ্রেসকে জোট থেকে বের করে দিয়েছে। কারণ, কংগ্রেসকে জোটে রাখলে আখেরে বিজেপির লাভ হবে, সেটা ওরা বুঝতে পেরেছিল।’’
কৃষকদের জন্য রাজ্য সরকার কিছু করেনি বলে রাহুল যে অভিযোগ করেছেন, সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মমতা আপনাদের মতো প্রতিশ্রুতি দেয় না। কৃষকদের জন্য এখানে কী করা হয়েছে, আপনি জানেন না।’’ ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড সভার
প্রসঙ্গ তুলেও কংগ্রেসকে কটাক্ষ
করেন তিনি। বলেন, ‘‘ব্রিগেডের সভায় সনিয়া গাঁধী দুই প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছিলেন। তার লেখা বক্তব্যও পাঠিয়ে মমতাকে সামনে এগিয়ে চলার বার্তা দিয়েছিলেন। আর আজ মালদহে কংগ্রেসিরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলকে দুর্বল করতে উঠেপড়ে লেগেছে।’’ কালিয়াচকের আফরাজুলের হত্যা, উত্তরপ্রদেশে শ্রমিকের মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী বলেন, ‘‘সবক্ষেত্রেই মমতা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেসিরা তাঁদের কাছে যাওয়ার সময় পাননি। এ রাজ্যে একমাত্র মমতাই বিজেপিকে রুখতে পারে। যে বিজেপি রাজনৈতিক প্রতিহংসা চরিতার্থ করতে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক তৃণমূল নেতাকে বারবার আক্রমণ করেছে।’’
শুভেন্দুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম বলেন, ‘‘রাহুলের সভার ভিড় দেখে ওঁদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। যত দিন যাবে ওঁরা আরও প্রলাপ বকবেন। আমরা বিজেপির সঙ্গে কখনও ঘর করিনি। ওরা করেছে। সেটা মানুষ জানেন।’’