খুনে সঙ্গী প্রেমিক

বাগডোগরার কুশওয়া দম্পতি খুনে অবশেষে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ভূমিকা সেওয়া অজয় কুশওয়ার সংস্থারই কর্মী ছিলেন। আরেক ধৃত সঞ্জয় তামাং ভূমিকার প্রেমিক।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০২:৫৭
Share:

অভিযুক্ত: (বাঁ দিক থেকে) অজয় তামাং এবং ভূমিকা সেওয়া।নিজস্ব চিত্র।

বাগডোগরার কুশওয়া দম্পতি খুনে অবশেষে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ভূমিকা সেওয়া অজয় কুশওয়ার সংস্থারই কর্মী ছিলেন। আরেক ধৃত সঞ্জয় তামাং ভূমিকার প্রেমিক। তিনি পেশায় পানশালার বাউন্সার। সোমবার রাতে ভক্তিনগর থেকে সঞ্জয়কে এবং বাগডোগরার বাড়ি থেকে ভূমিকাকে ধরা হয়। ভূমিকার ঘর থেকে রক্তের দাগ লাগা জামা, প্যান্ট মিলেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Advertisement

খুনের পাশাপাশি দম্পতির ঘরের আলমারি থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা খোয়া যায় বলে পুলিশ জানিয়েছে। খুনের আগে ও পরে ভূমিকা একটা সিমকার্ড ব্যবহার করে একাধিকবার সঞ্জয়ের এক আত্মীয়ের নম্বরে ফোন করে কথা বলেন বলেও পুলিশের দাবি। সঞ্জয় নিজের ফোন ব্যবহার না করে ওই আত্মীয়ের বাড়িতে ওই নম্বর থেকে ভূমিকার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। থানায় জিজ্ঞাসাবাদের ফাঁকে ভূমিকা একাধিক এসএমএস পাঠিয়ে সঞ্জয়কে লোকজন নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেন। বাগডোগরায় আসতে বারণ করেন। কোনওভাবে থানা থেকে বেরতে পারলে দেখা করার পরিকল্পনাও নেন। যা দেখে পুলিশের সন্দেহ, কোনওভাবে বেরতে পারলে দু’জনে পালিয়ে যেতেন। সঞ্জয়ের নম্বর ও সোশ্যাল সাইটের সব তথ্য ফোন থেকে মুছে দিয়েছিলেন ভূমিকা। তিনি প্রথমে তাঁর দু’টি নম্বর রয়েছে বলে পুলিশের কাছে জানান। পরে ফোন ঘেঁটে ভূমিকার আরও একটা নম্বরের হদিশ পায় পুলিশ। তার উপর ভিত্তি করে জেরার পরেই সঞ্জয়ের সঙ্গে যোগাযোগের ঘটনা সামনে আসে। খুনের পরে সঞ্জয় কালীঝোরাতে ভূমিকার বাবা পূরণ সেওয়ার সঙ্গে দেখা করেন। শেষে সেবকে ঘোরাঘুরির পরে রাতে ভক্তিনগরের শাস্ত্রীনগরের বাড়িতে ফেরেন। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বাড়িতে ভূমিকার স্কুটিও মিলেছে। ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছেন ডিসি তরুণ হালদার, ওসি দীপাঞ্জন দাসেরা।

পুলিশের দাবি, সাড়ে তিন বছর আগে বন্ধুদের মাধ্যমে দু’জনের পরিচয় হয়। বিয়ের কথা ভাবেন তাঁরা। কালিম্পঙের রিয়াং-এর বাসিন্দা সঞ্জয়ের পরিবার এই বিয়েতে রাজি ছিল না। তাই বাইরে সংসার গড়ার পরিকল্পনা নেন তাঁরা। তিনমাস আগে ভূমিকা ডিম্বাশয়ের রোগে আক্রান্ত হন। কলকাতায় চিকিৎসাও করান। কিন্তু ভূমিকার কাজ প্রতি ৩০০ টাকা ও সঞ্জয়ের ৮ হাজার টাকার বেতনে কিছুই চলছিল না।

Advertisement

শূন্যদৃষ্টি: জেঠুর কোলে চড়ে কুশওয়া দম্পতির ছেলে বিভান। নিজস্ব চিত্র

পুলিশের অনুমান, রাতে সাড়ে ১১টার সময় নোংরা ফেলার নাম করে ভূমিকা নীচে নেমে গেট খুললে সঞ্জয় বাড়িতে ঢোকে। পরে চাবির গোছা এবং দোতলায় জানলা খোলা হয়। তাতে মনে হয়, অজয়ই কাউকে নীচে চাবি দিয়েছিলেন। এর পরে লোহার রড বা ছোট শাবল দিয়ে দম্পতিকে ঘুমের মধ্যেই খুন করে আলমারি থেকে টাকা নিয়ে নেন। পরে সঞ্জয় ভূমিকার ও মিনাদেবীর মা’র ঘরের হ্যাচবোল্ট আটকায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন