Kanyashree

কন্যাশ্রীর টাকা মাছ ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে! ফেরত চাইতেই ‘না’, পুলিশের দ্বারস্থ ছাত্রী

কন্যাশ্রীর ২৫ হাজার টাকা ছাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না ঢুকে সেই টাকা তালসুর গ্রামের বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী দেবেন মহালদারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। তাই নিয়ে শোরগোল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৩ ১৭:১৭
Share:

উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছেন রিকিতা। ইচ্ছে নার্সিং নিয়ে পড়াশোনা করবেন। জানাচ্ছেন, কন্যাশ্রীর টাকাটা তাঁর খুব প্রয়োজন। —নিজস্ব চিত্র।

কন্যাশ্রীর টাকা ঢুকেছে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ছাত্রী সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে সোজাসুজি না বলে দেন ওই ব্যবসায়ী। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল এলাকায়। শুক্রবার থানা এবং ব্লক প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ছাত্রী। এমন অভিযোগে হতবাক খোদ বিডিও।

Advertisement

কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্পের টাকা উপভোক্তাদের কাছে না পৌঁছে অন্যদের কাছে যাচ্ছে, মাঝেমধ্যেই এমন অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করে এসেছে বিরোধীরা। এ বার মালদহের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর কন্যাশ্রী প্রকল্পের প্রাপ্য টাকা অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকায় বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের মদতে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে এলাকায়। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল জানাচ্ছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্য দিকে, নিজের প্রাপ্যের দাবিতে সরব ওই ছাত্রী।

হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত হরদমনগরের বাসিন্দা রিকিতা চৌধুরী এ বছরই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন। দৌলতপুর হাই স্কুলের ওই ছাত্রীর বাবা অনাদি চৌধুরী কৃষিকাজ করেন। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের মেয়ে রিকিতা কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য নাম নথিভুক্ত করেন। বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের খিদিরপুর শাখায় তাঁর অ্যাকাউন্ট রয়েছে। কিন্তু কন্যাশ্রীর ২৫ হাজার টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে না ঢুকে সেই টাকা তালসুর গ্রামের বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী দেবেন মহালদারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। এই ঘটনা জানতে পারার পর দেবেন মহালদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রিকিতার পরিবার। অভিযোগ, প্রথমে তিনি টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন বলেছিলেন। কিন্তু পরে সেই টাকা দিতে আপত্তি জানান। এর পরে ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন রিকিতা। এই মর্মে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এক জনের কন্যাশ্রীর টাকা কী ভাবে অন্য জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গেল তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

Advertisement

রিকিতার স্বপ্ন উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর নার্সিং কোর্স করার। তাঁর কথায়, ‘‘কন্যাশ্রীর ২৫ হাজার টাকা আমার কাছে বড় ভরসা।’’ কিন্তু কখন ওই টাকা পাবেন তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন ছাত্রী। তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি আমার হকের টাকার দাবি করছি।’’ এ নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিজয় গিরি বলেন, ‘‘তদন্ত করে দেখা হচ্ছে সমস্ত ঘটনা। যিনি প্রকৃত উপভোক্তা, তিনি ঠিকই টাকা পাবেন।’’ বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক শোরগোল শুরু হওয়ায় মালদহ জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, ‘‘প্রশাসনকে বলব, কোথায় ভুল হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখতে। এটা আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রকল্প। এখানে যার ন্যায্য পাওনা সেই পাবে।’’ অন্য দিকে উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়ালের কটাক্ষ, ‘‘এটা কোনও ভুল না। তৃণমূলের মদতে দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে। তাই প্রকৃত উপভোক্তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন