রাজ্যপালের কাছে কে, প্রশ্ন

দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের বেশিরভাগ কর্তাব্যক্তিই জানিয়েছেন, রাজ্যপালের সফর নিয়ে তাঁদের কাছে কোনও বার্তা আসেনি। জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি জানান, রাজ্যপালের সফর নিয়ে তাঁর কিছু জানা নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:২১
Share:

জগদীপ ধনখড়। —ফাইল চিত্র

সোমবার পরপর শিলিগুড়ি আসছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুসারে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামবেন দু’জনে। বিমানবন্দরে নেমে হেলিকপ্টারে কোচবিহার চলে যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। আর বাগডোগরার কাছে রানিডাঙায় সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) আয়োজিত সারা ভারত তিরন্দাজি প্রতিযোগিতার উদ্বোধনে যোগ দেবেন রাজ্যপাল। এই সময়ের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তারা কে কোথায় থাকবেন, তা নিয়েই এখন জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, প্রোটোকল মেনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন কে কে?

Advertisement

দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের বেশিরভাগ কর্তাব্যক্তিই জানিয়েছেন, রাজ্যপালের সফর নিয়ে তাঁদের কাছে কোনও বার্তা আসেনি। জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি জানান, রাজ্যপালের সফর নিয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘রাজভবনের পক্ষ থেকে কোনও চিঠি আমাদের কাছে আসেনি।’’ তবে পুলিশের তরফে রাজ্যপালকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়া হবে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘রাজ্যপালের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমাদের কাছে বার্তা এসেছে। প্রোটোকল অনুসারে সেই ব্যবস্থা করা হবে। তার বাইরে কিছু জানা নেই।’’

এসএসবি সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বাগডোগরায় নামবেন রাজ্যপাল ও তাঁর স্ত্রী। সেখান থেকে তাঁরা যাবেন রানিডাঙায়। বেলা দেড়টা নাগাদ আসবেন শিলিগুড়ি স্টেট গেস্ট হাউসে। সেখানে বিশ্রাম নিয়ে এবং তার পরে সাংবাদিক বৈঠক করে ৪টে ৩৫ মিনিটে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হবেন। বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটের বিমানে কলকাতা ফিরে যাবেন তাঁরা। এখন পর্যন্ত প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিনই অর্থাৎ সোমবার বেলা ১টা ৫০ মিনিটে বাগডোগরায় নামবেন মুখ্যমন্ত্রী। বিমানবন্দরেই খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তিনি কোচবিহারে চলে যাবেন। তাঁর সঙ্গে কি প্রশাসনিক কর্তারা দেখা করবেন না? জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্তাটি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী খুব কম সময়ের জন্য শিলিগুড়িতে থাকবেন। অনেক সময়ই তিনি প্রশাসনিক নানা কাজের বিষয়ে জানতে চান। তাই আমাদের থাকতেই হবে।’’

Advertisement

এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়ি দিয়েই কার্যত তাঁর জেলা সফর শুরু করেছিলেন রাজ্যপাল। সে বারে তাঁর সঙ্গে কোনও প্রশাসনিক অফিসারই দেখা করতে আসেননি। তিনি যে প্রশাসনিক বৈঠক করেন, সেখানে বিরোধী বিধায়ক, সাংসদেরা হাজির থাকলেও ছিলেন না স্থানীয় তৃণমূল নেতা বা বিধায়কেরা। পরে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের তরফে বলা হয়, বৈঠক হয়েছিল দার্জিলিং জেলার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে। এই জেলায় তৃণমূলের কোনও সাংসদ, বিধায়ক নেই। যদিও একটি সূত্রের দাবি, মন্ত্রী গৌতম দেবকে একটি অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছিল। গৌতম অবশ্য সেই দাবি অস্বীকার করে জানান, সেই সময়ে তিনি জরুরি প্রশাসনিক কাজে অন্যত্র ছিলেন।

রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, প্রশাসনিক কর্তাদের এই গরহাজিরা তিনি খেয়াল করেছেন। এ বারে অবশ্য এখন পর্যন্ত রাজ্যপালের কোনও প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা নেই। তবে রাজ্যপাল কোথাও গেলে সাধারণত জেলার প্রশাসন ও পুলিশ কর্তাদের অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত থাকার কথা। সৌজন্য বিনিময় করতে সাংসদ, বিধায়ক বা মন্ত্রীও বিমানবন্দরে যেতে পারেন। কিন্তু ধনখড়ের আগের সফরে এমন কিছুই হয়নি।

এ বারে হবে কি? এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। সরাসরি না বললেও অনেকেই ঘরোয়া আলোচনায় জানাচ্ছেন, সাধ করে কে আর রাজ্য প্রশাসনের বিরাগভাজন হতে যাবে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন