হঠাৎ ঢুকে কড়া বার্তা

জমিদারসুলভ মনোভাব ছাড়তে হবে। চলতে হবে একসঙ্গে। মালদহের মহানন্দা ভবনে জেলার তৃণমূল নেতাদের পরিষ্কার এ কথা জানিয়ে দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

মালদহ শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০২:১০
Share:

ভরসা: শহিদ জওয়ান পলাশ মণ্ডলের মা শেফালিদেবীকে অর্থসাহায্যের চেক দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়েই কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। বুধবার বুনিয়াদপুরে। ছবি: অমিত মোহান্ত

জমিদারসুলভ মনোভাব ছাড়তে হবে। চলতে হবে একসঙ্গে। মালদহের মহানন্দা ভবনে জেলার তৃণমূল নেতাদের পরিষ্কার এ কথা জানিয়ে দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বুধবার সন্ধেবেলা গৌড় ভবনে দলের নেতাদের সঙ্গে মুকুল রায়ের বৈঠক চলার সময়, আচমকাই তিনি সেখানে ঢুকে পড়েন। জেলার কোর কমিটি ভেঙে দিয়ে নয়া জেলা কমিটিও গঠন করে দেন।

সেই কমিটিতে মোয়াজ্জেম হোসেনকেই ফের জেলা সভাপতি করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখে নতুন জেলা কমিটির সদস্যদের প্রতি শুক্রবার করে দলীয় বৈঠক করারও নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি নেতাদের ব্লকে ব্লকে ঘুরে বৈঠকের পরামর্শ দেন তিনি।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে মমতা এই জেলায় পা দেওয়ার আগেই অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটানোর উদ্যোগ শুরু হয়ে যায়। মঙ্গলবার রাতে মমতাকে স্বাগত জানাতে এক সঙ্গে মালদহ স্টেশনে গিয়েছিলেন সাবিত্রী মিত্র ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। বহু দিন পরে তাঁদের এক সঙ্গে দেখা গেল। তখনই বার্তা পৌঁছেছিল, মালদহে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটাতে এ বারে কড়া হাতেই রাশ ধরতে চলেছেন দলনেত্রী। তার প্রমাণ পাওয়া গেল মুখ্যমন্ত্রীর সফরের দ্বিতীয় দিন বুধবারেও। মহানন্দা ভবনে মুকুল রায় ও ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে সাবিত্রী-কৃষ্ণেন্দু এক সঙ্গে গিয়ে দেখাও করেছেন।

এ দিন বেলা ১২টা থেকে মহানন্দা ভবনে মালদহের জেলা নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন মুকুলবাবু। বুনিয়াদপুর থেকে বিকেল পাঁচটায় ফিরে এসে মমতা গৌড় ভবনেই ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ আচমকা তিনি পাশেই থাকা মহানন্দা ভবনে চলা দলের বৈঠকে পৌঁছে যান। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, সেখানে তিনি দলের নেতাদের পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ‘‘অনেক ঝগড়া হয়েছে। এ বার জমিদারি মনোভাব ছেড়ে সকলে মিলে জেলায় দলের কাজ করুন।’’

নতুন জেলা কমিটির সহকারী সভাপতি হয়েছেন আবু নাসের খান চৌধুরী ও তজমুল হোসেন। কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার, সুমালা অগ্রবাল ও নীহাররঞ্জন ঘোষ। সদস্য হিসেবে সাবিত্রী মিত্র, কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, অসিত বসু এবং জেলার বিভিন্ন গণসংগঠনের সভাপতিদের রাখা হয়েছে। এ ছাড়া এত দিন কলকাতায় দলের কোর কমিটির যে বৈঠক হত, তাতে মোয়াজ্জেম হোসেন, সভাধিপতি সরলা মুর্মু ও যুব সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি থাকতেন। এ বার থেকে তাঁদের সঙ্গে কৃষ্ণেন্দু, নীহার, দুলাল ও সুমালাও থাকবেন। এ দিন মুকুল বৈঠক করেছেন নীহার, দুলালদের সঙ্গেও। সেখানেও দলের কর্মীদের কাছে নেত্রীর কড়া বার্তা পৌঁছে দেন তিনি।

মমতা অবশ্য রাতে বেশিক্ষণ ছিলেন না। কমিটি গড়া হয়ে যাওয়ার পরেই তিনি গৌড় ভবনে ফিরে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন