চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে ফের সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নোট বাতিলের পর থেকে এ পর্যন্ত বড়-ছোট মিলিয়ে সাতটি চা বাগান বন্ধ হয়েছে। এ দিন, বুধবারই বন্ধ হয়ে গিয়েছে কালচিনি এবং রায়মাটাং, ডুয়ার্সের দুই বাগান। নোট বাতিলের প্রভাব যে উত্তরবঙ্গের চা শিল্পে পড়েছে, তা নিয়ে সংশয় নেই শ্রমিক-মালিক কোনও পক্ষেরই। সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী ফের চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে সরব হওয়ায় আশার আলো দেখছেন উভয়পক্ষের অনেকেই। বুধবার টুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, চা শ্রমিকদের মজুরি জেলাশাসকদের মাধ্যমে দেওযা হোক। আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত এই নিয়ম জারি রাখার দাবিও টুইট বার্তায় জানানো হয়।
নোট বাতিল এবং ব্যাঙ্ক লেনদেনে বিধি নিষেধ ঘোষণার পরদিন থেকেই চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। একলপ্তে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে না পারায় বন্ধ হয়ে যায় চা শ্রমিকদের মজুরি। বেশ কিছু চা বাগান বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে প্রথমে জেলাশাসকরাই নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকে বাগান কর্তৃপক্ষকে টাকা দিতে থাকেন। চা বাগান মালিকদের থেকে টাকা জমা নিয়ে তা ভাঙিয়ে ফের মালিকদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কয়েকটি চা বাগানে সেই মতো মজুরিও হয়। যদিও তাতে বাধ সাধে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। জানানো হয়, সরাসরি চা বাগান মালিকরাই ব্যাঙ্ক থেকে পর্যাপ্ত টাকা তুলতে পারবেন। শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাতেও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি। বেশির ভাগ বাগানেই এখনও মজুরি হয়নি বলে দাবি।
বুধবার রাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেছেন। তাতেই চা শ্রমিকদের মজুরির প্রসঙ্গ ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবিকে স্বাগত জানিয়েছে বিরোধী সংগঠনগুলিও। আইএনটিইউসি নেতা অলোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কগুলির যা অবস্থা তাতে শ্রমিকেরা নির্দিষ্ট দিনে লাইনে দাঁড়িয়ে পুরো টাকা পাবেন কি না, তাতেই তো সন্দেহ। কারণ এক একটি বাগানে সপ্তাহের এক এক দিন মজুরি হয়। জেলাশাসক হস্তক্ষেপ করলে কিছু সুরাহা হতে পারে।’’ বাগান মালিকদের সংগঠন টি অ্যাসোসিয়েশনের অব ইন্ডিয়ার তরাই-এর সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, ‘‘অনলাইনে হোক অথবা জেলাশাসকের মাধ্যমে, শ্রমিকরা নির্দিষ্ট সময়ে মজুরি পেলেই হল। শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার সময়সীমা বাড়ানো উচিত।’