সীমান্তের কাছে মিলেছে এ সব সামগ্রী। নিজস্ব িচত্র
তখনও ভোরের আলো ফোটেনি। গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হলদিবাড়ির দুরমুজ পাড়ার বাসিন্দাদের। বুধবার ভোরে গ্রামের কাছে সীমান্তের কাঁটাতারের পাশ থেকে গুলিবিদ্ধ এক মাঝবয়সীর দেহ দেখেন বাসিন্দারা। সকালে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করেছে।
বাসিন্দাদের দাবি, মঙ্গলবার ভোরে সীমান্তে বিএসএফের সঙ্গে একদল বাসিন্দার সংঘর্ষ হয়েছে। সীমান্ত থেকে গ্রামের দূরত্ব পাঁচশো মিটার। শীতের রাতে দু’পক্ষের চেঁচামেচিও গ্রাম থেকে শোনা গিয়েছিল বলে দাবি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বিএসএফের গুলিতে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বিএসএফের একটি সূত্রের দাবি, নিহত ব্যক্তি বাংলাদেশি নাগরিক। বিএসএফ সূত্রে খবর, সোমবার গভীর রাত থেকে প্রায় পঞ্চাশ জনের একটি দল সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া কাটছিল। বাধা দিলে বিএসএফকে লক্ষ করে পাথর ছোড়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জওয়ানরা শূন্যে গুলি চালান বলে দাবি। যদিও সরকারি ভাবে বিএসএফের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
পারমেখলিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের দূরমুজপাড়ায় বাংলাদেশ সীমান্তে পাহারার দায়িত্বে রয়েছে বিএসএফের ১৪৩ নম্বর ব্যাটেলিয়ন। জওয়ানদের অভিযোগ, অন্ধকার ও কুয়াশার সুযোগ নিয়ে শীতের রাতে পাচারের প্রবণতা বেড়ে যায়। সোমবার গভীর রাতেও চোরাচালানকারীদের একটি দল সীমান্তরেখার ৭৯১ নম্বর আর্ন্তজাতিক পিলারের সামনে জড়ো হযে তার কাটছিল বলে অভিযোগ।
বিএসএফের দাবি, রাতে দেখা যায় এমন উচ্চপ্রযুক্তির দূরবীন দিয়ে দলটিকে দেখা যায়। সীমান্তের দিকে বিএসএফের দল এগিয়ে গেলে উল্টো দিক থেকে পাথর ছোড়া শুরু হয় বলে অভিযোগ। চোরাচালানকারী দলের কেউ কেউ কাঁটাতার কেটে ভারতের মাটিতে চলে এসে পাথর ছুড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ। তারপরেই শূন্যে গুলি ছোড়া হয় বলে বিএসএফের দাবি। গ্রামবাসীদের দাবি, গুলি নিহতের মাথায় লেগেছে।
বিএসএফের তরফে নিহত ব্যক্তির নাম পরিচয়ও জানানো হয়েছে। যদিও সেই পরিচয় পুলিশ যাচাই করে উঠতে পারেনি। বিএসএফের তরফে অবশ্য সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি এ দিন দেওয়া হয়নি। পুলিশকে বিএসএফ জানিয়েছে, নিহতের হাতে কাঁটাতার কাটার যন্ত্র ছিল, পকেট থেকে মোবাইল এবং বাংলাদেশি নম্বরের সিমকার্ড উদ্ধার হয়েছে। বাংলাদেশের নীলফামারি জেলার পশ্চিম সাতনাই গ্রামে নিহতের বাড়ি বলেও দাবি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আজ বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত হবে। হলদিবাড়ি থানার আইসি প্রবীণ প্রধান বলেন, “দুরমুজপাড়ার গ্রামে আতঙ্ক রয়েছে। পুলিশ টহলদারি চলছে।”