ডোমহাটে এখনও সঙ্কটে মা-ছেলে

পরিবারের তিনজন এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ববিতা মণ্ডল এবং স্কুলপড়ুয়া তাঁর দুই ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসক বুধবারও জানিয়েছেন

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মানিকচক শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:১৫
Share:

পরীক্ষা: মানিকচকের যে বাড়িটিতে আগুন লেগেছিল, সেখানে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র

পরিবারের তিনজন এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ববিতা মণ্ডল এবং স্কুলপড়ুয়া তাঁর দুই ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসক বুধবারও জানিয়েছেন।
আগুনে পুড়ে ববিতার স্বামী বিকাশ ও মেয়ে গোপী ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে তাঁর দুই ছেলে বিশাল ও অলোক। তাঁর নিজের শরীরেরও অধিকাংশ পুড়ে গিয়েছে। কথা বলার মতো শক্তি নেই। চোখের ইশারায় ছেলেদের খোঁজ নিচ্ছেন। চোখের সামনে এই কষ্ট দেখে আঁতকে উঠছেন আত্মীয়স্বজনেরা। ববিতার জা রূপালি মণ্ডল বলেন, “ছোট দেওরের পুরো পরিবার শেষ। আর বড় ভাসুর (বিকাশ) আর ওঁর এক মেয়ে মারা গিয়েছেন। বড় ভাসুরের স্ত্রী এবং তাঁর দুই ছেলে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। উনি (ববিতা) কথা বলতে পারছেন না। আমাকে দেখে ইশারায় ছেলেদের খোঁজ নিচ্ছেন। এমন পরিণতি চোখের সামনে দেখে স্থির থাকতে পারছি না। এসব দেখতে হবে সেটা কখনও ভাবিনি।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনজনেরই এখনও সঙ্কট কাটেনি। সপ্তাহদুয়েক না গড়ালে রোগীদের শারীরিক অবস্থার অগ্রগতির কথা বলা সম্ভব নয়। চিকিৎসকদের দাবি, ক্ষত শুকোতে শুরু করলে শরীরে টান ধরবে। সেই সময় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। রোগীদের সর্বক্ষণ নজরদারিতে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুপার অমিতকুমার দাঁ। তিনি বলেন, “রোগীদের শারীরিক অবস্থার উন্নতিতে চিকিৎসকেরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।”
মানিকচকের ডোমহাটৈ পারিবারিক বিবাদের জেরে গত রবিবার আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় একই পরিবারের ন’জন অগ্নিদগ্ধ হন। বিকাশের ভাই গোবিন্দ, তাঁর স্ত্রী রাখী এবং দুই মেয়ে প্রিয়া-শুভশ্রীর মৃত্যু হয়। ঘটনায় ছ’জনেরই মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিকাশের ভাই মাখন এখনও অধরা। তাঁর স্ত্রী কাঞ্চন ও প্রতিবেশী কুলেশ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মাখন গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভুমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরের টালি খুলে পেট্রল ঢেলে ন’জনকেই পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়েছিল। তার মধ্যে ছ’জনই মারা গিয়েছেন। অপরাধীর কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে পড়শি সকলেই। পুলিশ জানিয়েছে, ফরেন্সিক দল ঘটনার নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে। মাখনের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) দীপক সরকার। তিনি বলেন, “ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। দ্রুত মাখনকে গ্রেফতারের চেষ্টাও চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন