মানুষী ছিল্লর৷
বিশ্বসুন্দরীর সঙ্গে গিয়ে হাত মেলালেন চা বাগানের মহিলা শ্রমিক। তারপরে অবাক হয়ে দেখলেন, হাতটি ছাড়লেন না মানুষী ছিল্লর। আস্তে আস্তে কথা শুরু করলেন। কথায় কথায় জিজ্ঞাসা করলেন, স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন কিনা। ওই চা শ্রমিক অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন। বিশ্বসুন্দরীকে বললেন, স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের নানা সমস্যা রয়েছে। মনের বাধা তাঁর যদি বা দূর হয়, পরিবারের হয় না। মানুষী তাঁকে বোঝালেন, এই চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে।
ডুয়ার্সের মোগলকাটা চা বাগানে রবিবার এসেছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা৷ আর তাঁদের মাঝখানে বসেছিলেন খোদ ২০১৭-র বিশ্ব সুন্দরী মানুষী৷ চা বাগানের মহিলা শ্রমিকদের মাঝে মিশে গিয়ে কখনও তাঁদের সঙ্গে করমর্দন করলেন, তো কখনও বা তাদের সঙ্গে গল্পে মেতে উঠলেন তিনি৷
মানুষী জানান, ঋতুচক্রের সময় মহিলারা যাতে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন, সে ব্যাপারে তাঁদের সচেতন করতে এ বছরের গোড়া থেকেই একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিশ্বসুন্দরীর গোটা দলটি৷ সেই উপলক্ষেই এ দিন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে তাঁদের মোগলকাটা চা বাগানে আসা৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চাই না, ঋতুচক্রের সময় মহিলা চা শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে বসে থাকুন৷ ওই সময়টাতেও তাঁরা যাতে বাকি দিনগুলির মতো কাটাতে পারেন, সেটাই আমাদের উদ্দেশ্য৷ তা বোঝাতে পেরে আমরা খুবই খুশি৷’’
মোগলকাটা চা বাগানে এই মুহুর্তে কার্যত ছুটির মেজাজ চলছে৷ বৃহস্পতিবার থেকে বাগানে শুরু হয়েছে বার্ষিক ছুটি৷ কিন্তু বিশ্বসুন্দরী সহ বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা বাগানে আসবেন খবর পেয়ে এ দিন সকাল থেকেই অন্য রূপ নেয় গোটা বাগান৷ বাগানের শ্রমিকরা তো বটেই, আশাপাশের লোকও বাগানে ভিড় জমান৷ বাগানের তরফে মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘প্রাথমিকভাবে তাঁদের যে সব জায়গায় যাওয়ার কথা ছিল, তার মধ্যে ডুয়ার্স বা আমাদের চা বাগান ছিল না৷ আচমকাই এখানে আসবেন বলে ঠিক হয়৷’’ মৃগাঙ্কবাবুর কথায়, ‘‘আমাদের বাগানের শ্রমিকরা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারে ততটা সচেতন নন৷ তবে এ বার এই চিত্র একেবারেই বদলে যাবে বলে আমরা আশাবাদী৷’’
বাগান সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিশ্ব সুন্দরী সহ বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা মহিলা শ্রমিকদের হাতে পাটের তৈরি ন্যাপকিন তুলে দেন৷