উদযাপন: গনি খানের জন্মদিনে। মালদহের টাউন হলে। নিজস্ব চিত্র
বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে টাউন হল। জন্মদিন উপলক্ষে কাটা হল তিন পাউন্ডের কেক। বৃহস্পতিবার সকালে মালদহের টাউন হলে এমন ভাবেই প্রয়াত নেতা গনিখানের জন্মদিবস পালন করলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে গনিখানের জন্মদিবসে দলীয় নেতা-কর্মীদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্যই করলেন না জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম নূর। বক্তব্যের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নাম না করে ধর্ম নিয়ে রাজনীতির প্রসঙ্গে বিজেপিরই সমালোচনা করেন তিনি। এমনকী, বিজেপির বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তাও দেন মৌসম।
পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় প্রধান শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে তৃণমূল। অথচ সেই তৃণমূলকে মোকাবিলা নিয়েই মৌসমের বক্তব্য নেই। ফলে তৃণমূলের সঙ্গে মৌসমের যোগসাজশ নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দলের অন্দরেই। মৌসম বলেন, “বরকত সাহেবের জন্মদিবস পালন করা হয়েছে। এখানে রাজনৈতিক কোনও বিষয় নেই। বরকত সাহেব ধর্ম নিয়ে কখনও রাজনীতি করতেন না। সমস্ত ধর্মের মানুষের জন্য কাজ করতেন তিনি। সেই বিষয়গুলি সকলের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।” তৃণমূল নিয়ে কিছু মন্তব্য করলেন না কেন? তিনি বলেন, “রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হয়নি। শুধু বরকত সাহেবের স্মৃতিচারণ করা হয়েছে।”
পঞ্চায়েত ভোটে এ বারে জেলায় কংগ্রেসের ব্যাপক ভরাডুবি ঘটেছে। জেলা পরিষদ হাত ছাড়া হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত দখলেও ব্যর্থ কংগ্রেস। কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে জেলায় প্রথম স্থানে উঠে এসেছে তৃণমূল। আর দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। তাতেই স্তম্ভিত জেলা কংগ্রেস শিবির। কারণ মালদহে সংখ্যালঘু ভোট বরাবরই কংগ্রেসের দিকে ছিল। এ বারে সেই ভোটে থাবা বসিয়েছে তৃণমূল। এমন অবস্থায় মৌসমের তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা শুরু হয়। ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েতগুলিতে বোর্ড গঠনে তাঁর নির্দেশে কংগ্রেস বিভিন্ন অঞ্চলে তৃণমূলকে সমর্থন করায় জল্পনা বেড়ে যায়। এ দিনও মৌসম কিছু না বলায় এক কর্মী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সঙ্গেই আমাদের লড়াই হয়েছে। সেই তৃণমূলের সঙ্গেই আবার বোর্ড গড়তে হয়েছে। এ দিনও নেত্রী তৃণমূলের বিষয়ে কোনও মন্তব্যই করলেন না!’’
এ দিন গনিখানের ৯২তম জন্মদিবসে তাঁর মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান কংগ্রেস নেতা-নেত্রীরা। পরে মালদহ মেডিক্যাল ও রেলওয়ে হাসপাতালে ফল বিলি করা হয়। এ ছাড়া হবিবপুর, গাজল, পুরাতন মালদহে স্বাস্থ্য শিবিরও হয়।
কংগ্রেসের পাশাপাশি এ দিন বৃন্দাবনী ময়দান সংলগ্ন এলাকায় বরকতের মূর্তিতে মালা দেন বিধায়ক তথা পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ, কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ দাস, শুভময় বসু, তৃণমূল নেতা কল্যাণ মৌলিক-সহ একাধিক নেতা। নীহারবাবু বলেন, “বরকতদা জননেতা ছিলেন। সকলের জন্য কাজ করতেন।”