কর্মী বদলি, অভিযুক্ত মেয়র

বরো চেয়ারম্যানকে অন্ধকারে রেখে বাম কর্মচারী সংগঠনের এক কর্মীকে পুরসভার সদর দফতরে বদলি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় শিলিগুড়ির মেয়রের বিরুদ্ধে দলবাজির অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৭:৫৫
Share:

সাংবাদিক বৈঠকে সুজয় ঘটক। — নিজস্ব চিত্র

বরো চেয়ারম্যানকে অন্ধকারে রেখে বাম কর্মচারী সংগঠনের এক কর্মীকে পুরসভার সদর দফতরে বদলি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় শিলিগুড়ির মেয়রের বিরুদ্ধে দলবাজির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার পরিষেবার বিভিন্ন বিষয়ে পুরসভার তরফে যথাযথ উদ্যোগ নেই বলে চিঠি দিয়েছেন তিন নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান সুজয় ঘটক। তাতে এ ভাবে ওই কর্মী বদলির ঘটনা নিয়ম বিরুদ্ধ বলে তিনি অভিযোগও তুলেছেন। মেয়র বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’’

Advertisement

বরোর ওই কর্মীর নাম অরুণাভ দত্ত। তিনি ওয়ার্ক সুপার ভাইজারের কাজ করেন। বছরখানেক আগে তাকে জন সংযোগের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হলে তিনি বাসিন্দাদের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পর তাঁকে পানীয় জলের কর জমা নেওয়ার কাজে বরো অফিসে কাজ দেওয়া হয়। গত ২৩ নভেম্বর তাঁকে বরো থেকে ট্রেড লাইসেন্স দফতরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। অথচ বরো চেয়ারম্যান সে ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তিনি রিলিজ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তবে বরো অফিসার তাঁকে রিলিজ অর্ডার না দিলেও তিনি চলে গিয়েছেন। পুরসভার প্রধান ভবনে ট্রেড লাইসেন্স বিভাগে কাজ শুরু করেছেন কী ভাবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অথচ বরোর নথিতে এখনও সেখানকার কর্মী বলেই নাম রয়েছে। এমনকী ওই কর্মী ট্রেড লাইসেন্স বিভাগে যাওয়ার পর সেখানে নানা অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে বলে বরো চেয়ারম্যান দাবি তুলেছেন। অরুণাভবাবু বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে আমাকে বদলির চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়। তখন বরো অফিসারের কাছে রিলিজ অর্ডার চেয়েছিলাম। অথচ তা দেওয়া হয়নি। পরে পুর সচিবকে বলেছিলাম। তিনি আমাকে ট্রেড লাইসেন্স বিভাগে যোগ দিতে বলা হলে সেখানে কাজে যোগ দেই।’’ পুর সচিব সপ্তর্ষি নাগ বলেন, ‘‘রিলিজ অর্ডার নিয়েই যোগ দেওয়া উচিত ছিল। বিষয়টি দেখছি।’’

বরো চেয়ারম্যান সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘নিয়ম না মেনেই অফিসের এক কর্মীকে পুরসভার প্রধান ভবনে বদলি করা হয়েছে। আমি এবং বরোর অফিসাররাও এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রয়েছি। এ ধরনের বদলি দ্রুত বন্ধ করা দরকার।’’ সেই সঙ্গে বরো চেয়ারম্যানের অভিযোগ, বর্তমান পুরবোর্ড ক্ষমতায় এসেই ‘শ্রম দিবস’ পদ্ধতিতে কর্মী সংখ্যা বাড়িয়েছে। তাঁদের দলের লোকদের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আগের পুরবোর্ডের সময় ওই খাতে যে খরচ হত তা অন্তত ২০ লক্ষ টাকা বেড়ে গিয়েছে। অথচ উন্নয়ন কাজের প্রসঙ্গ উঠলেই বলা হচ্ছে টাকা নেই। একদিকে যখন টাকা নেই তখন কর্মী সংখ্যা বাড়িয়ে খরচ বাড়ানো হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বরো চেয়ারম্যান।

Advertisement

মেয়র অশোক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, পুর বাজেটের আগে বরো চেয়ারম্যানদের কাছে তাদের পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল। তারা যা জানিয়েছেন তা দেখা হবে। পুরসভা কী করছে বাজেটে তা নিয়েও বলা হবে।

বাজেট নিয়ে মেয়র পরামর্শ চাওয়ার প্রেক্ষিতেই এ দিন ওই সমস্ত পরিষেবার দিকগুলি নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত তিনজন কংগ্রেস কাউন্সিলর। তাঁদের দাবি, টাকা নেই বলে কাজ হচ্ছে না বলা হচ্ছে, অথচ এমন বেশ কিছু কাজ রয়েছে যেগুলি করার ক্ষেত্রে সদিচ্ছা থাকলেই হল। টাকার দরকার নেই। অথচ সেই কাজগুলিও করা হচ্ছে না। তার মধ্যে শহরকে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মুক্ত করতে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া, শহরের যত্রতত্র রাস্তা, নিকাশির জায়গা দখল করে বেআইনি দোকান গুমটি গড়ে উঠলেও বা নদীখাত দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ হলেও তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া মতো বিভিন্ন অভিযোগ। অভিযোগ, শহরের নিকাশি নালাগুলি যথাযথ ভাবে পরিষ্কার করা হয়নি, স্বাস্থ্য পরিষেবা খাতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকা এলেও পরিকাঠামো, স্বাস্থ্যকর্মীর এখনও যথাযথ ব্যবস্থা হয়নি। এ দিন পুরসভার বিরোধী দল তৃণমূলের তরফেও বাজেটে মিউটেশন ফি’র মতো অতিরিক্ত কর প্রত্যাহার করা-সহ বিভিন্ন দাবি জানান, বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement