গৌতম চায়ের আড্ডায়, মুড়ি খেলেন অশোক

বনধের সমর্থনে পথে নেমে সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত থানায় ‘বন্দি’ থাকলেন শহরের মেয়র। জনজীবন স্বাভাবিক রাখার আবেদন জানানো বিশাল মিছিলে বিভিন্ন রাস্তায় হেঁটে বহু বছর পরে ফুটপাতের চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিলেন মন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪১
Share:

শিলিগুড়ি পুরসভায় মন্ত্রী গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।

বনধের সমর্থনে পথে নেমে সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত থানায় ‘বন্দি’ থাকলেন শহরের মেয়র। জনজীবন স্বাভাবিক রাখার আবেদন জানানো বিশাল মিছিলে বিভিন্ন রাস্তায় হেঁটে বহু বছর পরে ফুটপাতের চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিলেন মন্ত্রী। পরস্পর বিরোধী দুই মিছিল এক রাস্তায় চলে আসতেই সামনে বুক পেতে দাঁড়ালেন পুলিশ কর্মীরা। গ্রেফতার হন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও। স্বাভাবিক কাজকর্ম হচ্ছে কি না দেখতে পুরসভাতে চলে যান পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। এমনই নানা ঘটনা-অভিযোগে শুক্রবার সকাল থেকে সরগরম থাকল শিলিগুড়ি।

Advertisement

চায়ের ঠেকে ‘মিনিস্টার’

Advertisement

সিঙ্গুর দিবস পালনে দলের মিছিলে হাঁটতে সকাল দশটাতেই শিলিগুড়ির মহানন্দা মোড়ে পৌঁছে যান পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। সিঙ্গুর দিবসের মিছিলে বনধ ব্যর্থ করার স্লোগানও ওঠে। হিলকার্ট রোড-বিধান রোড হয়ে সেবক রোড ধরে মিছিল। দীর্ঘ মিছিল শেষ হয় সেবক মোড়ে দলের পার্টি অফিসের সামনে। তবে মন্ত্রী হঠাৎ হেঁটে এগোতে থাকেন হিলকার্ট রোডের দিকে। নিরাপত্তা কর্মীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। দলের নেতাদের মনে প্রশ্ন গৌতমবাবু যাচ্ছেন কোথায়? ফুটপাতে চায়ের দোকানের সামনে রাখা একটি স্কুটারে গিয়ে বসে পড়েন। দোকানিকে হাক পাড়েন, ‘‘তাপস, লাল চা, চিনি ছাড়া।’’ চেয়ার জোগাড় করে আনা হয়। প্রায় আধঘণ্টা চায়ের দোকানের সামনে বসে নির্ভেজাল আড্ডা দেন গৌতমবাবু। বলেন, ‘‘বহু বছর পরে এলাম।’’ চায়ের দোকানের মালিক তাপস দাসের কথায়, ‘‘আগে উনি রোজ আসতেন, গল্প করতেন। মিনিস্টার হওয়ার পরে প্রথম এলেন।’’

বিরিয়ানি নয়, মুড়ি খাব

মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্যদের থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছে সকাল দশটার আগে থেকে। শিলিগুড়ি থানার আইসির ঘরের সামনে চেয়ার নিয়ে বসে রয়েছেন অশোকবাবুরা। শতাধিক সমর্থক অশোকবাবুদের ঘিরে রয়েছেন। কেন তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানতে বেশ কয়েকবার শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সহ পদস্থ কর্তাদের ফোন করলেও কেউ তোলেননি বলে অভিযোগ। কোনও মামলা রুজু না করে কেন তাঁদের বসিয়ে রাখা হয়েছে, তার জবাবও মেলেনি বলে অভিযোগ। বেলা বাড়তে ‘ধৃত’ বাম কর্মী সমর্থকরা নিজেরাই চা, মুড়ি-চিড়ে আনিয়ে খেয়েছেন। হঠাৎই এক পুলিশ কর্মী খাবারের প্যাকেট নিয়ে অশোকবাবুদের খাবারের প্যাকেট নিয়ে আসেন। একজন জানন, বিরিয়ানি রয়েছে। অশোকবাবুর জবাব, ‘ওই প্যাকেট চাই না। আমরা মুড়ি খাব।’’

পুরসভা ‘দখল’

বেলা পৌনে বারোটা নাগাদ পুরসভায় যান পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। প্রথমে তৃণমূলের পরিষদীয় দলের ঘরে যান। পরে বিরোধী দলনেতার ঘরে কাউন্সিলরদের নিয়ে বসেন। ইতিমধ্যেই একজন বাম কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। অগস্ট মাসেই বোর্ড দখল করার হুমকি দিয়েছিলেন মন্ত্রী। বলেছিলেন অগস্ট বিপ্লব হবে। এ দিন গৌতমবাবু পুরসভায় বলেন, ‘‘বিপ্লব শুরু হয়েছে। বৃত্ত সম্পূর্ণ হবে।’’ যা শুনে থানায় বসে মেয়র অশোকবাবু কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘পুলিশ দিয়ে আমাকে থানায় বসিয়ে রেখে কেউ কী পুরসভা দখল করতে চাইছে! শহরবাসী সঙ্গে রয়েছে, তা কোনও অগস্ট কেন, কোনও মাসেই হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন