নজরদারির অভাব, বাসিন্দারা দুষছেন প্রশাসনকে

কিসের ছাঁট জানা নেই

সাধারণত মাংস কেনার সময় এই অংশগুলো নিতে চান না বেশিরভাগ ক্রেতা। এগুলোই জড়ো করে পরে অল্প দামে বিক্রি করা হয়। যেহেতু সামনে কেটে দেওয়া হয় না, সেই কারণে ছাঁট বলে যা বিক্রি হচ্ছে তা আদতে কিসের মাংস তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায় বলে জানাচ্ছেন ক্রেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৩
Share:

আশঙ্কা: কোথা থেকে আসে ছাঁট। তার খোঁজে নজর দেওয়ার দাবি ভাগাড়ের দিকেও। জলপাইগুড়ি। নিজস্ব চিত্র

বেলা বাড়লেই দিনবাজার বা স্টেশন বাজারে দেখা মেলে ছাঁট বিক্রেতাদের। কেউ বাজারের এক কোণায় পলিথিন পেতে বিক্রি করে মুরগির ছাঁট। বউবাজারের দিকে বিক্রি হয় পাঁঠার মাংস ছাঁটও। মুরগি, পাঁঠার দেহের ভিতর থাকা নানা তন্ত্র, মাংস কাটার সময় খসে পড়া নানা টুকরোই বিক্রি হয় ছাঁট হিসেবে। এর মধ্যে রয়েছে মুরগির গলা, পাঁঠার পায়ের দিকের অংশ।

Advertisement

সাধারণত মাংস কেনার সময় এই অংশগুলো নিতে চান না বেশিরভাগ ক্রেতা। এগুলোই জড়ো করে পরে অল্প দামে বিক্রি করা হয়। যেহেতু সামনে কেটে দেওয়া হয় না, সেই কারণে ছাঁট বলে যা বিক্রি হচ্ছে তা আদতে কিসের মাংস তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায় বলে জানাচ্ছেন ক্রেতারা।

এরই মধ্যে কলকাতায় ভাগাড়ে ফেলা মৃত পশুর দেহ থেকে মাংস কেটে খাবারের দোকানে সরবরাহের চক্র ফাঁস হয়েছে। এই ঘটনার পরে আর ঝুঁকি নিতে রাজি নয় জলপাইগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ। এরকম ঘটনা রুখতে শহরে ছাঁট বিক্রিতে পাকাপাকি ভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করাই একমাত্র পথ বলে মনে করছে পুর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “কোনওরকম অস্বাস্থ্যকর খাবার শহরে চলতে দেওয়া হবে না। কোথায় কি মাংস বিক্রি হচ্ছে তা দেখতে বিশেষ নজরদারি চলবে।”

জলপাইগুড়ি শহরের বাজারগুলোতে মাংস বিক্রির একাধিক স্থায়ী দোকান রয়েছে। পাশাপাশি রাতারাতি গজিয়ে ওঠা দোকানও রয়েছে। বাজারের পাশে ছাঁট নিয়ে বসে পড়ছেন যে কেউ। তা বিক্রিও হচ্ছে। প্রতিদিন স্টেশন বাজারে ছাঁট নিয়ে বসেন এক বিক্রেতা। দুপুর ১টার আগেই তাঁর বিক্রি শেষ হয়ে যায়। কেজি প্রতি দরের বালাই নেই। হাতের আন্দাজে ত্রিশ-চল্লিশ টাকায় মাংস বিক্রি করেন তিনি।

শুক্রবার তিনি দাবি করেন, স্টেশন বাজারের মুরগি ব্যবসায়ীদের থেকেই তিনি ছাঁট কিনে বিক্রি করেন। যদিও স্টেশন বাজারের ওই ব্যবসায়ীদের দাবি, কোনওদিন ওই যুবক তাদের থেকে ছাঁট নেননি। ফলে কোথা থেকে আসে ওই ছাঁট মাংস। তা সকলেরই অজানা। বউবাজারে কালো প্লাস্টিকে বিক্রি হচ্ছে ছাঁট। এক ক্যারিব্যাগের দাম পঞ্চাশ টাকা। পাঁঠার মাংস বলে দাবি করলেও, এত কমদামে কি করে ওই মাংস বিক্রি সম্ভব তার উত্তর দিতে পারলেন না বিক্রেতা। পান্ডাপাড়ার বাসিন্দা বিমা কর্মী সুধন দত্তের কথায়, “নিশ্চয়ই গরমিল রয়েছে। না হলে এত কম দামে বিক্রি হতেই পারে না।”

মাংসে গরমিল থাকলে তা পুরসভাই খুঁজে বের করুক এমন দাবি করেছেন ক্রেতারা। এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘অনেক পদক্ষেপ করা হয়। কতদিন তা চলে সেটাই এখন দেখার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন