ওষুধ: মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের কার্টন জমে ছাদে। নিজস্ব চিত্র
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ছাদে ডাঁই হয়ে পড়ে আছে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের কার্টন। অভিযোগ, তার মধ্যে রয়েছে জীবনদায়ী ওষুধ, ইঞ্জেকশনও। ছাদে ওষুধ পড়ে থাকার কথা মেনে নিয়েছেন হাসপাতালের সুপার মৈত্রেয়ী করও। তবে এর মধ্যে জীবনদায়ী ওষুধ রয়েছে, এটা মানতে চাননি তিনি।
এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রোগীদের সময়মতো ওষুধ সরবরাহ করতে না-পারার ফলেই এই বিপুল পরিমাণ ওষুধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে পড়ে আছে— এমন অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। এবং সেই সঙ্গে তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের একাংশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। হাসপাতালের চিকিৎসকদের অনেকেই মনে করছেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওই সমস্ত ওষুধের মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা। বিষয়টি গিয়েছে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের কানেও। তিনি বলেছেন, ‘‘এ বিষয়ে খোঁজ নেব।’’
হাসপাতালের সুপার বলেন, ‘‘মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ নষ্ট করার ক্ষেত্রে কোনও নির্দেশিকা এখনও স্বাস্থ্য দফতর দেয়নি। সেটা না পাওয়া পর্যন্ত ওষুধগুলো স্টোর করে রাখতেই বলা হয়েছে। সেই মতো ছাদে নির্দিষ্ট জায়গায় সেগুলো রাখা হয়েছে। নির্দেশ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে তার মধ্যে জীবনদায়ী কোনও ওষুধ নেই বলেই তাঁর দাবি।
চিকিৎসকদের একাংশ জেনেরিক নামে ওষুধ না-লেখায় এবং স্টোরে যে সমস্ত ওষুধ রয়েছে সেগুলো প্রেসক্রিপশনে বেশি না-লেখায় তা পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্মী, আধিকারিকদের একাংশ। এই প্রবণতা চলতে থাকলে ওষুধ নষ্ট বাড়বে বলেই তাঁদের আশঙ্কা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, জমিয়ে রাখা ওষুধগুলি গত কয়েক বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ। কী কী ওষুধ রয়েছে সেই তালিকায়, তা অবশ্য কর্তৃপক্ষ জানাতে পারেননি। সুপার জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার অনেকে আগে থেকেই ওই সমস্ত ওষুধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে।
হাসপাতালের স্টোরে পড়ে থেকে ওষুধ নষ্ট হওয়ার ঘটনা এর আগেও ঘটেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। বছর তিনেক আগে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তদন্ত হয়। কত ওষুধ নষ্ট হয়েছে তার হিসাবও রাখা ছিল না সে সময়। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তদন্ত করা হয়। দায়িত্বে থাকা স্টোর কিপার অবসর নিলে সেই সময়ে তাঁর বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আটকে দেওয়া হয়।