পুতুল থেকে প্রতিমা

তবে মাটির পুতুল তৈরি করলেও কোনও দিনই প্রথামাফিক মাটি দিয়ে দুর্গা গড়েননি মালদহের গৌড় কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রঞ্জিত দাস। কখনও কাঠের ছিলকা, কখনও পাট, কখনও বা বাঁশের চাটাইয়ের দিয়ে মূর্তি গড়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:৩০
Share:

সংসারের চালাতে ছোট বেলাতেই হাতে তুলে নিয়েছিলেন মাটি আর রং-তুলি। মায়ের সঙ্গে মাটির পুতুল বানিয়ে বিভিন্ন মেলায় বিক্রি করাই ছিল কাজ। সেটা ২০০৭ সাল। সেই শুরু। একদিকে মাটির পুতুল তৈরি আর পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া। সে সময় দুর্গা মূর্তি গড়ার নেশাও পেয়ে বসে তাঁকে। ২০০৯ সালে প্রথমবার তৈরি করেছিল দুর্গা মূর্তি।

Advertisement

তবে মাটির পুতুল তৈরি করলেও কোনও দিনই প্রথামাফিক মাটি দিয়ে দুর্গা গড়েননি মালদহের গৌড় কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রঞ্জিত দাস। কখনও কাঠের ছিলকা, কখনও পাট, কখনও বা বাঁশের চাটাইয়ের দিয়ে মূর্তি গড়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। এ বার তাঁর উপকরণ খেজুর পাতা, নারকেল পাতা, নারকেলের দড়ি, নারকেলের খোল ও মটর। রঞ্জিতের এই মূর্তিটি এ বার পাড়ি দেবে গঙ্গা পেরিয়ে মুর্শিদাবাদে। ধুলিয়ানের পুর্ব রতনপুর সর্বজনীন কমিটির পুজোয়। নাওয়া-খাওয়া ভুলে এখন মূর্তিতে তুলির শেষ টান দিতে ব্যস্ত রঞ্জিত। পুরাতন মালদহের সাহাপুর পঞ্চায়েতের ২ নম্বর বিমল দাস কলোনিতে বাড়ি রঞ্জিতের। বাবা অবিনাশবাবু পেশায় রিকশা চালক ছিলেন। রঞ্জিত যখন সাহাপুর হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া তখন তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাই বাবা, মা, দিদি ও ভাইকে নিয়ে পাঁচজনের সংসারের হাল ধরতে হাতে রং-তুলি তুলে নিতে হয়েছিল। মা পুষ্পদেবীর সঙ্গে মাটির পুতুল তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন। রঞ্জিত প্রথম কাঠের ছিলকা দিয়ে দুর্গা প্রতিমা গড়েন ২০০৯ সালে। মালদহের একটি পুজোয় সেই মূর্তি দারুণ প্রশংসা কুড়োয়। সেই থেকে প্রতিবছরই পাট, ধান, সুতোর মতো নানা উপকরণ দিয়ে প্রতিমা গড়ছেন তিনি।

বাড়িতেই টিনের চালের তৈরি ভাঙাচোরা স্টুডিওতে কাজের ফাঁকে রঞ্জিত বলেন, ‘‘সারা বছর পুতুল তৈরি করে বিভিন্ন সরকারি হস্তশিল্প মেলা ও গ্রামীণ মেলায় বিক্রি করে সংসার চলে। দুর্গা প্রতিমা গড়ে কিছু বাড়তি লাভ হয়।’’ এ বার তিনি খেজুরের পাতা, নারকেলের পাতা, নারকেলের দড়ি, কাঁচের টুকরো, মটর দিয়ে মূর্তি গড়ে তুলেছেন। রঞ্জিতের আশা, ‘‘এ বারও তাঁর তৈরি ওই প্রতিমা মানুষের মন জয় করবে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন