ব্যাঙ্ককর্মীকে ‘হুমকি’ মন্ত্রীর

শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ সেচমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখতে যাবেন বলে কোচবিহার শহর থেকে দিনহাটা যাচ্ছিলেন তিনি। ঘুঘুমারির কাছে ব্যাঙ্কের ওই শাখার সামনে গ্রাহকদের লম্বা লাইন দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:১২
Share:

ক্ষুব্ধ: ঘুঘুমারিতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ক্ষোভ মন্ত্রীর। —নিজস্ব চিত্র।

ফের রণংদেহী মূর্তিতে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এ বার কোচবিহারে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখায় ঢুকে কর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ সেচমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখতে যাবেন বলে কোচবিহার শহর থেকে দিনহাটা যাচ্ছিলেন তিনি। ঘুঘুমারির কাছে ব্যাঙ্কের ওই শাখার সামনে গ্রাহকদের লম্বা লাইন দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন তিনি। ব্যাঙ্কে ঢুকে ম্যানেজারের খোঁজ করেন। তাঁকে না পেয়েই মেজাজ হারান মন্ত্রী। কেন গ্রাহকরা সময় মতো পরিষেবা পাচ্ছেন না, কর্মীদের কাছে তার কৈফিয়ত তলব করেন। জবাব পছন্দ না হওয়ায় এক কর্মীকে চড় মারতে যান বলেও অভিযোগ। পিওনের পদে কর্মরত এক কর্মী কেন কম্পিউটার নিয়ে বসে আছেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মন্ত্রী।

পরে ম্যানেজার এলে তাকে সতর্ক করে মন্ত্রী বলেন,“দিনের পর দিন মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। কোনও পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না। সারাদিন বসে থাকছেন সাধারণ মানুষ। একটু খাওয়ার জলের ব্যবস্থাও নেই। পরিষেবা দিতে না পারলে ব্যাঙ্ক রেখে কি লাভ।”

Advertisement

ঘুঘুমারিতে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের ওই শাখার পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। গ্রাহকদের অনেকেই অভিযোগ করেন, ব্যাঙ্কে প্রায়ই দিন লিঙ্ক থাকে না। তাই বারবার ব্যাঙ্কে আসার পর ফিরিয়ে দেওয়া হয় গ্রাহকদের। বর্তমানে এক সপ্তাহের বেশি সময় লিঙ্ক নেই। তাই কোনও কাজ হয় না। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্কে দালাল রয়েছে। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনে কাজ হয় বলেও তাদের অভিযোগ। গ্রাহকদের লাইনে থাকা টাপুরহাটের বাসিন্দা বৃদ্ধা মোমেনা বিবি বলেন, “চারদিন ধরে এসে ফিরে যাচ্ছি। ইন্দিরা আবাসনের ঘরের টাকা পাচ্ছি না। আরও ক’দিন ঘুরতে হবে কে জানে।”

মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর ব্যাঙ্কের এক কর্মী বলেন,“এই বিষয়ে আমাদের কিছু করণীয় নেই। মন্ত্রী অযথা আমাদের ধমকালেন।” ব্যাঙ্কের ম্যানেজার দেবাংশু চক্রবর্তী অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সহিরুদ্দিন মিয়াঁ বলেন, “ব্যাঙ্কের হয়রানি নিয়ে সাধারণ মানুষ আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। মন্ত্রী ঘুরে যাওয়ার পরে সব গ্রাহককে এ দিন টাকা দিয়ে দেওয়া হয়।”

গত বিধানসভা ভোটের সময় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দুই ভোটকর্মীকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরুদ্ধে। দলের এক কর্মীকে চড় মারারও অভিযোগ উঠেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন