স্টেডিয়ামের এই কাজ নিয়েই অভিযোগ উঠেছে। নিজস্ব চিত্র
স্টেডিয়ামে এত কম মাটি কেন, সে প্রশ্ন তুলে প্রকাশ্যেই বাস্তুকার ও বরাত দেওয়া সংস্থাকে ধমক দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
বুধবার সকালে কোচবিহার এমজেএন স্টেডিয়ামের ঘটনা। মন্ত্রীকে প্রকাশ্যেই বলতে শোনা যায়, “স্টেডিয়ামে তো মাটিই পড়েনি! এত কম মাটি ফেলে টাকা তুলে নেওয়া হল কী করে?” ১৫ দিনের মধ্যে ওই কাজ করা না হলে তিনি ঠিকাদার সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করারও হুঁশিয়ারি দেন। পরে তিনি বলেন, “স্টেডিয়ামের মাটি ফেলার কাজ ২৫ শতাংশ না করে বিডিও অফিসের ওভারসিয়র ও ঠিকাদার সংস্থা যৌথ ভাবে বিল তুলে নিয়েছে। পনেরো দিনের মধ্যে ওই কাজ করা না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, রাসমেলার মাঠ, পুলিশ লাইন ও এমজেএন স্টেডিয়ামে কোটি টাকার উপরে খরচ করে মাটি ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। ইতিমধ্যেই ওই তিনটি জায়গাতেই মাটি ফেলার কাজ শেষ হয়েছে। এমনকি ঠিকাদারি সংস্থার হাতে মাটির বিলও পৌঁছে গিয়েছে। এমজেএন স্টেডিয়ামে ২৪ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করে মাটি ফেলার বরাত দেওয়া হয়। তাতে মাঠের মাঝখানে ১৩ ইঞ্চি ও চারদিকে ১০ ইঞ্চি মাটি ফেলার কথা। এ দিন মন্ত্রী নিজেই ওই স্টেডিয়ামে অভিযোগ করেন, ওই স্টেডিয়ামে যে টাকার মাটি ফেলার কথা ছিল তার পঁচিশ শতাংশও হয়নি। উপস্থিত কোচবিহার ১ ব্লকের সহকারী বাস্তুকার মানস সর্বাধিকারি সাংবাদিকদের জানান, কোথাও ভুল হতে পারে। তা ঠিক করে নেওয়া হবে। ঠিকাদারি সংস্থার পক্ষে অলোক রক্ষিত বলেন, “মাপ অনুযায়ী কাজ করেছি। কাজের পরে তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেও কোনও খামতি থাকলে সেই হিসেবে কাজ করা হবে।”
তবে মন্ত্রীর এই বার্তাকে ভোটের মুখে চমক বলেই কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের আরও অভিযোগ, শুধু ওই কাজই নয়, সমস্ত প্রকল্পেই এমন ভাবে কাজ হচ্ছে। রাসমেলার মাঠ বা পুলিশ লাইনের মাঠেও যে টাকা বরাদ্দ হয়েছিল মাটি ফেলার জন্য সেই তুলনায় কাজ হয়নি। এমনকি রাস্তা, সেতু-সহ গ্রামাঞ্চলে ও শহরের মধ্যেও যে উন্নয়নের কাজ হচ্ছে তা বরাদ্দ অনুযায়ী কাজ হয় না। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতি রাভা বলেন, “দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে তৃণমূল সরকার। সব কাজ তো কমিশনে হয়। এ প্রায় সবার জানা। মাঝে মাঝে মন্ত্রীরা একটু চমক তৈরি করার জন্যে এমন কাজ করেন। আখেরে কাজের কাজ কিছু হবে না।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “বাংলায় একটা প্রবাদ আছে কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে পড়বে। এই সরকারের দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে। তা নতুন করে বলার কিছু নেই। আমরা মানুষের উন্নয়ন চাই। সঠিক কাজ চাই। তাই চমক তৈরি না করে কাজ করা প্রয়োজন।”