‘মোমো’ নিয়ে নিছক কৌতূহল ডেকে আনছে সর্বনাশ

‘মোমো গেম’ নিয়ে এমনিতেই আতঙ্কে রয়েছেন মোবাইল ব্যবহারকারীরা। অজানা ওই খেলা নিয়ে প্রশ্ন ও ভয় দুটোই রয়েছে মানুষের মনে। আর সেই সুযোগে এই গেমকে কাজে লাগিয়ে একদল কিশোর-কিশোরী মেতেছে ‘ভয় দেখানোর’ খেলায়।

Advertisement

অর্ণব সাহা

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:০০
Share:

‘মোমো গেম’ নিয়ে এমনিতেই আতঙ্কে রয়েছেন মোবাইল ব্যবহারকারীরা। অজানা ওই খেলা নিয়ে প্রশ্ন ও ভয় দুটোই রয়েছে মানুষের মনে। আর সেই সুযোগে এই গেমকে কাজে লাগিয়ে একদল কিশোর-কিশোরী মেতেছে ‘ভয় দেখানোর’ খেলায়।

Advertisement

কিছু দিন আগে ধূপগুড়ির গাদং এক গ্রাম পঞ্চায়েতের এক কলেজ ছাত্রী পুলিশে অভিযোগ করে, তাঁকে মোমো ভিডিও কল করেছে। সেই অভিযোগের সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে সেই ছাত্রীরই পরিচিত কেউ মোমো সেজে ওই কাণ্ড করেছে। ঘটনায় ওই ছাত্রীর নিজের ভাইয়ের নামও উঠে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, পরিচিত এবং বন্ধু-বান্ধবদের ভয় দেখাতে মোমোর ছবি ব্যবহার করে একটি ফেক হোয়াটস্‌অ্যাপ অ্যাকাউন্ট খোলে ওই ছাত্র। তার পর সেই অ্যাকাউন্ট থেকে কল, ভিডিও কল ও মেসেজ করে ভয় দেখাতে শুরু করে সবাইকে। তবে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই ছাত্রটি একাই নয়। তার অন্যান্য বন্ধুদেরও রয়েছে এই ধরণের ‘ফেক’ অ্যাকাউন্ট।

Advertisement

ধূপগুড়ি থানার আইসি সুবীর কর্মকার বলেন, ‘‘একটু ইন্টারনেট ঘাঁটলেই দেখা যাবে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে এ ধরণের বহু অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। যার সাহায্যে নিজের আসল মোবাইল নম্বরটি লুকিয়ে তার পরিবর্তে মনগড়া যে কোনও নম্বর ব্যবহার করে ফোন করা যায় অন্যের মোবাইলে। ওই অ্যাপ্লিকেশনগুলো গুগল প্লে-স্টোর সহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। ওই ছাত্রটির মোবাইলেও এ ধরণের অ্যাপ্লিকেশন পাওয়া গিয়েছে।’’

জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের সাইবার সেলের এক আধিকারিক জানান, অনেকে এ ধরণের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ভুয়ো মেসেজ ছড়ায়। তাদের আবার ধরাটাও অনেক সময়ে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, আজকাল অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের লোকেশন লুকনো খুব সহজ। ‘সাইফন’ নামে এ ধরণের একটি অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। যার সাহায্যে মোবাইল ব্যবহারকারী তার টাওয়ার লোকেশনটি খুব সহজেই লুকোতে পারেন। একই ভাবে মোবাইলের ‘আইএমইআই’ নম্বরটিও এখন পরিবর্তন করা যায়।

এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শিক্ষক, মনোবিদ উত্তম মজুমদার বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের আবদার মেটাতে এখন মা-বাবারা অল্পবয়সী সন্তানদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন তুলে দিচ্ছেন। কিন্তু তারপর তারা সেই মোবাইল কীভাবে ব্যবহার করছে, সেই ব্যবহার পদ্ধতি নিয়ে খোঁজ রাখেন না অভিভাবকেরা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কিশোর-কিশোরীদের কৌতূহল যখন তখন মেটাতে পারে একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল। নানা রকম কৌতূহলের বশেই ও তা মেটাতে তাই নানা ফাঁদে পা দিয়ে অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে তারা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন