আন্দোলনে ঝুলল তালা, থমকে বিশ্ববিদ্যালয়

বুধবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-সহ সমস্ত বিভাগে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনে নামলেন রিসার্চ স্কলাররা। এ দিন ক্যাম্পাসে কোনও ক্লাস হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০৪:২৯
Share:

চলছে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

‘স্টেট এডেড কলেজ টিচার’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার প্রতিবাদে বুধবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-সহ সমস্ত বিভাগে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনে নামলেন রিসার্চ স্কলাররা। এ দিন ক্যাম্পাসে কোনও ক্লাস হয়নি। বন্ধ ছিল সমস্ত প্রশাসনিক কাজকর্মও। ফলে ক্লাস করতে এসে যেমন পড়ুয়াদের চলে যেতে হয়েছে, তেমনই বিভিন্ন কলেজ থেকে প্রশাসনিক কাজে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন অনেক শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী। হঠাৎ করে ক্যাম্পাস বন্ধ করে আন্দোলন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশ। ‘ইউনাইটেড রিসার্চ স্কলার্স, এমফিল অ্যান্ড স্টুডেন্ট অব ইউনিভার্সিটি অব নর্থ বেঙ্গল’-এর ব্যানারে এ দিন আন্দোলন হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। পরে ক্যাম্পাস থেকে এশিয়ান হাইওয়ে-২ ধরে শিবমন্দির বাজারের মধ্য দিয়ে মিছিলও করে তাঁরা।

Advertisement

সোমবার হাওড়ার প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলেজে কর্মরত আংশিক সময়ের শিক্ষক, চুক্তিভিত্তিক পূর্ণ সময়ের শিক্ষক এবং অতিথি শিক্ষক— ওই তিন ধরনের পদ তুলে দিয়ে একটিই পদ গড়া হবে। সেই পদের নাম হবে, ‘স্টেট এডেড কলেজ টিচার’। শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে ওই পদে দু’টি বিভাগ থাকবে। যাদের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নির্ধারিত যোগ্যতা আছে, তাঁরা স্টেট এডেড কলেজ টিচার ক্যাটাগরি-১ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হবেন। যাঁদের ইউজিসি নির্ধারিত যোগ্যতা নেই, তাঁরা স্টেট এডেড কলেজ টিচার ক্যাটাগরি-২ বিভাগের মধ্যে পড়বেন।

যোগ্যতামান অনুসারে বর্ধিত বেতনের কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি জানান, স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের চাকরির মেয়াদ হবে ৬০ বছর। তাঁরা বদলির সুযোগ এবং অবসরের পর তিন লক্ষ টাকা গ্র্যাচুইটিও পাবেন। চাকরির মেয়াদ ৬০ বছর করার ঘোষণাই মূল আপত্তি আন্দোলনকারীদের। তাঁদের নেতা সুজিত মণ্ডল বলেন, ‘‘আংশিক সময়ের ও অতিথি শিক্ষকদের কার্যত স্থায়ী করে দেওয়া হল। তার ফলে এক দিকে যেমন আমাদের চাকরির সুযোগ কমল, অন্য দিকে কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ ব্যবস্থাপনাও দুর্বল হল। রাজ্য সরকার আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। ঘোষণা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’’ আর এক নেতা কালীপদ বর্মণ বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে রাখা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমরা রাজ্য সরকারের কাছে বার্তা দিতে চাই, তাঁরা ঘোষণা প্রত্যাহার না করলে এই আন্দোলন লাগাতার চলবে। এর পর রাজ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও আন্দোলন শুরু হবে।’’

Advertisement

আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ক্যাম্পাস স্বাভাবিক হবে কি না, তা নিয়ে আন্দোলনকারীদের দু’রকম বক্তব্য শোনা গিয়েছে। আন্দোলনকারীদের একটা অংশ জানিয়েছেন, তাঁরা ক্যাম্পাস বন্ধ রেখেই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। অন্য অংশের বক্তব্য, ক্যাম্পাস বন্ধ করে নয়, রোজ ১ ঘণ্টা করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করা হবে।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবেই রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত। আন্দোলনকারীদের বলেছি, দাবিপত্র দিলে রাজ্যের কাছে পাঠিয়ে দেব। বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে আন্দোলন করলে সমাধান হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন